‘প্যাকেজ ভ্যাট’ বহালে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরা

নতুন অর্থবছরে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের নিয়ম চালু হলে তা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ী উভয় মহল ‘বিশৃঙ্খলার মুখে’ পড়বে বলে মনে করছে খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2016, 11:43 AM
Updated : 29 May 2016, 11:43 AM

তাই এতোদিন ধরে চালু থাকা ‘প্যাকেজ ভ্যাটের’ নিয়ম যেন নতুন ভ্যাট আইনে সংযুক্ত করা হয় সেজন্য রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপেও চেয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

চলতি বছরের জুলাই থেকে ভ্যাট আইন ২০১২ কার্যকরের কথা রয়েছে, যেখানে কৃষিজাত কয়েকটি পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্যের খুচরা বিক্রির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হবে।

এই প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আদায় কষ্টসাধ্য হবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঝামেলা বাড়বে বলে সতর্ক করে আসছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) আশঙ্কা, এতে বাড়বে নিত্যপণ্যের দাম।

সংবাদ সম্মেলনে ‘প্যাকেজ ভ্যাটের’ নিয়ম বহালে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি দাবি আদায়ে সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সারা দেশের দোকানীদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মানববন্ধন পালনের আহ্বান জানান খুচরা ব্যবসায়ীদের সংগঠনটির নেতারা।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব মো. শাহ আলম খন্দকার বলেন, ২০০৫ সালে যে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্যাকেজ ভ্যাট প্রথা চালু করা হয়, সেখানেই ভ্যাট নির্ধারণের জন্য তিনটি কমিটি গঠনের কথা বলা আছে। কেন্দ্রীয় কমিটি, স্থানীয় কমিটি ও উপ-কমিটি।

কিন্তু এখনও এনবিআর কর্মকর্তারা সেই কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেননি। তাদের কারণেই প্যাকেজ ভ্যাটে সফলতা আসেনি। সারা দেশে ২/৩টি কমিটি গঠন করা হলেও তারা ছিল নীরব।

এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘নির্লিপ্ততার’ কারণে প্যাকেজ ভ্যাট পুরোপুরি আদায় হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, এনবিআর সক্রিয় হলে ব্যবসায়ীরা ভ্যাট আদায়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।

প্যাকেজ ভ্যাটের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ের আইন চালু হলে ‘ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের হয়রানিতে’ পড়বেন বলে সংবাদ সম্মেলনে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সমিতির সভাপতি এসএ কাদের কিরণ।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে প্যাকেজ ভ্যাট বাতিলের প্রস্তাবটি সংসদে উঠলেও ব্যবসায়ীদের দাবি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখেন। এখনও তিনি সদয় হলে ব্যবসায়ীরা ‘বড় ধরনের হয়রানি’ থেকে রক্ষা পাবে।

“বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হয়রানির মুখে পড়বে।”

১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ের জন্য প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আদালাভাবে হিসাব করার জন্য একজন লোক রাখতে হবে। সেখানে পিওএস মেশিন বা ইসিআর মেশিন বসাতে হবে,” বলেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি।

প্যাকেজ ভ্যাট নতুন ভ্যাট আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনে আরও আলোচনা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও প্যাকেজ ভ্যাট প্রথা চালু আছে। 

নতুন আইনের ২(৯৭) এর ‘ক’ ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার ‘আত্মীয়র’ কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ের কথা বলা আছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট আইন থেকে ‘আত্মীয়’ শব্দটিও বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

“এখানে আত্মীয় বলতে অনেক কিছু এসে যায়। বিষয়টিও জটিলতার সৃষ্টি করবে। আইন থেকে আত্মীয় শব্দটাও বাদ দেওয়া প্রয়োজন।”