পরিকল্পনামন্ত্রীর পরিকল্পনা ‘আটকে দিল’ পদ্মা

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) শতভাগ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়ে তাতে সফল না হওয়ার জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ ব্যয় না হওয়াকে প্রধান কারণ দেখিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2015, 02:35 PM
Updated : 28 July 2015, 02:35 PM

“পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে শেষ পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অব্যবহৃত থাকায় বাস্তবায়নের (এডিপি) হার ৯১ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে,” বলেছেন তিনি।

গত অর্থবছরের মূল এডিপিতে পদ্মা সেতুর জন্য ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। পরে সংশোধন করে তা ৭ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

বছর শেষে ওই অর্থও ব্যয় করতে না পারায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ফেরত দেয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা সেতুর অব্যবহৃত অর্থের পাশাপাশি অর্থবছরের মাঝামাঝিতে বিএনপি জোটের তিন মাসের সহিংস আন্দোলনকেও কারণ দেখান ‍মুস্তফা কামাল।  

গত অর্থবছরে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৭৭ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে ব্যয় হয়েছে ৭১ হাজার ১৩৯ কোটি টাকায়। শতকরা হিসেবে তা ৯১ ভাগ।

অর্থবছরের মাঝামাঝিতে এসে গত ৮ জানুয়ারি পরিকল্পনামন্ত্রী এডিপির ১০০ ভাগ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, রবার দিয়ে মুছে নয়, কম্পিউটারে ক্লিক করে নয়, যথাযথভাবেই শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন করা হবে।

তবে বছর শেষে ৯ শতাংশ কম অর্জনকেই মেনে নিতে হয়েছে মুস্তফা কামালকে, যা তার পূর্বসূরিদের ক্ষেত্রেও ঘটে আসছে।

মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ব্যর্থতার কারণ দেখানোর পাশাপাশি এডিপির পুরোপুরি বাস্তবায়নে সামগ্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের উপর জোর দেন তিনি।

“আমরা যদি ৭৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে না পারি, তবে এবছর ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয় করব কীভাবে? এজন্য সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দল হিসেবে কাজ করতে হবে। কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় লোকজনদের সম্পৃক্ত করা গেলে প্রকল্প আরও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।”

যেসব প্রকল্প পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন মন্ত্রী।

“আমরা ইতোমধ্যে ৩০ জন প্রকল্প পরিচালককে বদলি করেছি। এর মাধ্যমে আমরা এ বার্তা দিচ্ছি, যাতে কোনো প্রকল্প পরিচালক এটা মনে না করেন, প্রকল্পে কাজ ঠিকমতো না করে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আরাম আয়েশে সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়।”

একটি প্রকল্প বারবার সংশোধনের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেন মুস্তফা কামাল। বছরের পর বছর ধরে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়ার পক্ষেও নিজের অবস্থান জানান তিনি।

বছর শেষে এডিপি ব্যয়ের হিসাবে অর্থ বিভাগ ও আইএমইডির মধ্যে অমিল থাকে কেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আইএমইডি পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ থেকে বরাদ্দের হিসাব তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ে থাকে। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় নিরীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর বরাদ্দের হিসাবকে গ্রহণ করে বলে পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেতে দেরি হয়।