বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা: ১৩ সহকর্মীর মুক্তির দাবিতে অনশনে শিক্ষকরা

প্রশ্নপত্রে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিএনপির এক নেতার তুলনার অভিযোগে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে প্রতীক অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2017, 02:42 PM
Updated : 24 Sept 2017, 02:42 PM

রোববার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে হওয়া এ অনশন কর্মসূচি থেকে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ১৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও করেন।

কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ বলেন, ১৩ শিক্ষক কারাগারে থাকায় তাদের পরিবার চরম দুর্ভোগে রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্রের কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম উল্লেখ ছিল না। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে।

১৩ শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে লকিতুল্লাহ বলেন, প্রশ্নপত্রে অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির কারণে ক্ষমা চাওয়া সত্ত্বেও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ।

বিকালে এ অনশন কর্মসূচি ভাঙ্গান একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবু মোমেন।

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, শিক্ষকনেতা সুনীল চক্রবর্তী, বাশিস চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সভাপতি উত্তম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক অশোক সাহা প্রমুখ।

গত বছরের ১৭ জুলাই নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের ৪ নম্বর প্রশ্নে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি লিয়াকত আলীকে জাতির জনকের সঙ্গে তুলনা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

এর একদিন পর গত বছরের ১৯ জুলাই বাঁশখালী উপজেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার হন শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া এবং বাঁশখালী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কালীপুর নাসেরা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহেরুল ইসলাম।

ওই রাতে বাঁশখালী থানার সেসময়ের এএসআই নুরুল আনোয়ার ৫৪ ধারায় একটি মামলা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ১২৪ (ক) ধারা অনুসারে সেটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

এ মামলায় গত ১১ জুলাই হাই কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন ১৩ শিক্ষক। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা বাঁশখালী আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

বাঁশখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হলে ২৩ অগাস্ট দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও প্রশ্নকর্তা শিক্ষকসহ মোট ১৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।