চট্টগ্রামে নিখোঁজের একদিন পর মিলল শিশুর লাশ

চট্টগ্রামে বাসা থেকে বেরিয়ে বাবার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর নয় বছর বয়সী শিশুর লাশ মিলেছে বাসার কাছেই একটি মার্কেটের তৃতীয় তলায়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2017, 09:00 AM
Updated : 15 June 2017, 09:21 AM

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট আতাতুল ক্যাডেট মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত সালমা আক্তার বাদুরতলার শাহ আমানত সোসাইটি এলাকার মো. সোলায়মানের মেয়ে। সোলায়মান অটোরিকশা ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর পাঁচলাইশ থানার আরাকান সড়কের নঈমিয়া ভবন নামের মার্কেটের তিনতলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ভবনের তৃতীয় তলায় রাখা একটি কাঠের তৈরি কার্টনে আর্বজনা চাপা দিয়ে রাখা হয় লাশটি।

মো. সোয়ালমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে বেলা ১২টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাসায় ফেরে সালমা।

“ব্যাগ রেখে বহদ্দারহাট মোড়ের যমুনা পরিবহনের কাউন্টারে আমার কাছে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয় সে। তারপর থেকে সালামাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।”

সালমার সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় খোঁজাখুঁজির পাশাপাশি মাইকিং ও পোস্টারিং করে।

মঙ্গলবার রাতে সালমার সন্ধানে পাঁচলাইশ থানায় জিডিও করা হয়।

সোলায়মান বলেন, “এলাকার কয়েকটি ভবনের সিসি টিভির ফুটেজ যোগাড় করি। একটি ফুটেজে নঈমিয়া ভবনের সামনে সালমাকে দেখতে পাই।”

সালমার মামা মো. মহিউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফুটেজ দেখার পর মঙ্গলবার বিকাল থেকেই আমরা এলাকার ওই ভবনের সামনে পাহারা বসাই।

“কেউ না কেউ নঈমিয়া ভবনের দিকে নজর রাখতে থাকে।”

মঙ্গলবার রাতে সালামর স্বজনরা তার খোঁজে নঈমিয়া ভবনের গিয়েও তাকে পায়নি।

মহিউদ্দিন বলেন, “বুধবার রাত আড়াইটার দিকে স্থানীয় কয়েক জনসহ আমরা পাঁচ জন তিনতলায় যাই। সেখানে গাছের একটি কার্টন দেখতে পাই। সেটি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। কার্টনের উপর ভাঙা বেসিন, ছেড়া কাপড় ও আর্বজনার স্তুপ দিয়ে ঢাকা ছিল।”

ওইসব ময়লা সরিয়ে কার্টনের ভেতর ভাগ্নি সালমার লাশের সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান মহিউদ্দিন।

এরপর বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, ভবনটিতে দুটি সিঁড়ি। দক্ষিণ পাশের সিঁড়িটি ব্যবহার হত না। ওই সিঁড়িতে একটি গাছের কার্টনে লাশটি পাওয়া যায়।

নঈমিয়া ভবনের নিচ তলায় কয়েকটি দোকান, দুই তলায় একটি ডেন্টাল ক্লিনিক ও একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান এবং তৃতীয় তলায় একটি গোডাউন ও একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে।

পরিদর্শক ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, ভবনটির দোকান ও প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে বলেই প্রাথমিক পরিদর্শনে মনে হচ্ছে।

“শিশুটির গলার ডান পাশে একটি দাগ দেখা গেছে। তবে শরীরে পচন ধরে ফুলে যাওয়ায় সেটা আঘাতের দাগ কি না তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।”

কেন, কী কারণে, কিভাবে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সালমার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, “ময়নাতদন্ত হয়েছে, প্রতিবেদন পেলে হত্যাকাণ্ড কিভাবে হয়েছে তা জানা যাবে।”

ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।