ভুল কৌশলের সুযোগ নিলেন চান্দিমাল

রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়ে সুযোগটা করে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। দুই হাতে সেটা কাজে লাগিয়েছেন দিনেশ চান্দিমাল। করেছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম শতক, দলকে এনে দিয়েছেন তিনশ’ ছাড়ানো স্কোর।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতকলম্বো থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2017, 07:46 AM
Updated : 16 March 2017, 03:58 PM

এক ঘণ্টায় স্বাগতিকদের গুটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সম্ভব হয়নি দুই ঘণ্টায়ও। শ্রীলঙ্কা ৩৩৮ রানে অলআউট হয়েছে লাঞ্চের আগে বাড়তি আধ ঘণ্টায়। ৭ উইকেটে ২৩৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা স্বাগতিকরা শেষ তিন উইকেট হারিয়ে যোগ করে আরও ১০০ রান।

কলম্বোর পি সারা ওভালে বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার ইনিংস স্থায়ী হয় ৩০.২ ওভার। শেষ ৩ উইকেটে দলটি যোগ করে ১৪৩ রান। 

স্বাভাবিকভাবেই এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল চান্দিমালের। রঙ্গনা হেরাথ ও ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং করা সুরঙ্গা লাকমলের কাছ থেকে পেয়েছেন দারুণ সহায়তা।

শুরুতে চান্দিমাল আর হেরাথকে চাপে রাখে বাংলাদেশ। অতিথিদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের মাঝে ঠাণ্ডা মাথায় দলকে ধীরে ধীরে এগিয়ে নেন দুই ব্যাটসম্যান। প্রথম ঘণ্টায় ফেরানো যায় কেবল অধিনায়ককে।

সাকিব আল হাসানের বলে স্লিপে সৌম্য সরকারের পঞ্চম প্রচেষ্টার ক্যাচে ভাঙে ৫৫ রানের জুটি। শ্রীলঙ্কার স্কোর তখন ২৫০/৮। উইকেটে একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকার পরও তিনশ রানের ভেতরে রাখা সম্ভব ছিল।

কিন্তু দশম ব্যাটসম্যান লাকমল ক্রিজে আসার পর কৌশলে পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। চান্দিমালের জন্য সীমানায় নিয়ে যায় ছয়/সাত জন ফিল্ডার। আক্রমণ করার চেষ্টা করে লাকমলকে।

মোরাটুয়ায় দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যচে ঠিক একই কৌশল নিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার শতকের পর ফিল্ডিং ছড়িয়ে দিয়ে চান্দিমালকে সহজেই খেলার পথ করে দিয়েছিলেন মুশফিক। শ্রীলঙ্কান ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছিলেন অপরাজিত ১৯০ রানের দারুণ এক ইনিংস।

এবারও হাঁটছিলেন সেই পথে। প্রিয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তুলে নিয়েছিলেন চতুর্থ শতক। খেলছিলেন ইচ্ছেমতো। মাঝে একবার বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। মুস্তাফিজ রহমান, সাকিবরা তাকে পরাস্তও করতে পারছিল না। লাকমলকে স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন কমই।

দেখতে দেখতে জুটিতে উঠে যায় ৫৫ রান। স্বাগতিকদের চোখ তখন সাড়ে তিনশ’ রানে। তখনই আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফেরান বিপজ্জনক চান্দিমালকে। অফ স্পিনারকে স্লগ করতে গিয়ে মোসাদ্দেককে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ১৩৮ রানের চমৎকার ইনিংসটি। ৩০০ বল খেলে চান্দিমাল হাঁকিয়েছেন ১০টি চার ও একটি ছক্কা।

দশম উইকেটে লকশান সান্দকানের সঙ্গে লাকমল যোগ করেন আরও ৩৩ রান। শেষ উইকেট জুটি মাঠে থাকায় নির্ধারিত সময়ে লাঞ্চ নেওয়া হয়নি। বাড়তি আধ ঘণ্টার মধ্যে জুটি ভেঙে স্বস্তি ফেরান শুভাশীষ রায় চৌধুরী। ডানহাতি এই পেসারের বলে লাকমল থার্ড ম্যানে সৌম্যকে ক্যাচ দিলে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। লাঞ্চে যায় দুই দল।

৪৫ বলে ৩৫ রান করা লাকমলের তিন বাউন্ডারি দুটি চার ও একটি ছক্কা আসে মিরাজের এক ওভার থেকে।  

৯০ রানে ৩ উইকেট অফ স্পিনার মিরাজের। দুটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ, শুভাশীষ ও সাকিব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১১৩.৩ ওভারে ৩৩৮ (করুনারত্নে ৭, থারাঙ্গা ১১, মেন্ডিস ৫, চান্দিমাল ১৩৮, গুনারত্নে ১৩, ডি সিলভা ৩৪, ডিকভেলা ৩৪, পেরেরা ৯, হেরাথ ২৫, লাকমল ৩৫, সান্দকান ৫*; মুস্তাফিজ ২/৫০, শুভাশীষ ২/৫৩, মিরাজ ৩/৯০, তাইজুল ১/৪০, সাকিব ২/৮০, মোসাদ্দেক ০/১১)