নতুন ভবনে তালা, ক্লাশ চলছে বারান্দায়

সদ্য নির্মিত নতুন বিদ্যালয় ভবন ঠিকাদার বুঝিয়ে না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এখনও শেষ হয়নি। সামনে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা। অথচ তারা এখনও ক্লাস করছে নবনির্মিত ভবনটির বারান্দায়।

বিজয় চক্রবর্তী কাজল নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2014, 03:36 PM
Updated : 27 Oct 2014, 03:36 PM

সোমবার নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পশ্চিম শিমুলবাড়ি শালটিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধি।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, চলতি বছরের শুরুতে বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু। এদিকে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলায় বিকল্প ভবন না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময় ঝড়-বৃষ্টি-বাদল আর প্রখর রোদে গাছতলা কিংবা বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে ক্লাশ করতে হয়েছে।

এরইমধ্যে তিন মাস আগে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ভবন এখনও খুলে দেওয়া হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপেন্দ্র নাথ অধিকারী জানান, চলতি বছরের শুরুতে বিদ্যালয়রে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সে সময়ে উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় ক্লাশের জন্য ছোট একটি টিনের চালা নির্মাণ করা হয় বিদ্যালয় চত্বরে।

বেড়াবিহীন ওই টিনের চালার নীচে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় গাছতলা আর খোলা আকাশের নীচে ক্লাশ চলেছে।

আড়াই মাস আগে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বুঝে না পাওয়ার কারণে প্রবেশ করতে পারছেন না ভেতরে। বাধ্য হয়ে ওই ভবনের বারান্দায় বসে পাঠদান  করছেন তারা।

ভবন হস্তান্তর না হওয়ার কারণ তার জানা নেই বলে জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনূর রহমান জানান, “বিদ্যালয়ের ২৪৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এবারের পঞ্চম শ্রেণির সমাপণী পরীক্ষায় অংশ নেবে ৪৯ জন। সারা বছর প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে লেখাপড়া করে ফলাফল নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

“এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বছরে পঞ্চম শ্রেণির সমাপণী পরীক্ষার ফলাফল ভালো করেছিল। এবারের ফলাফল নিয়ে শঙ্কার আছি।”

বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ কাজ করেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মালেক ট্রেডার্স।

প্রতিষ্ঠানের অংশীদার তাজুল ইসলাম জানান, ভবন নির্মাণের সকল কাজ শেষ হয়েছে। ল্যাট্রিনের সামান্য কিছু কাজ বাকি থাকায় হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, ওই স্থানের পুরাতন ভবনটি সময়মত না সরানোর কারণে নির্মাণকাজে বিলম্ব ঘটে। এমন বিলম্বের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নয় কর্তৃপক্ষ দায়ী।

এ ব্যাপারে  উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, বেশিরভাগ ভবন হস্তান্তর হলেও ওই ভবনের ছোটখাট কিছু ক্রুটির কারণে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত ভবনের সকল ক্রটিগুলো সমাধান করে হস্তান্তর করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বণিক বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।”

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নয়ন ইলাম ও আফজালুল ইসলাম বলে, সারাবছর খোলা আকাশের নীচে ক্লাশ করে লেখাপড়া ঠিকমত হয়নি। সামনে প্রাথমিক সমাপণী পরীক্ষা। খোলা স্থানে লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না।