সঞ্চয়পত্র নিয়ে হাই কোর্টের এক রায়ের পর নমিনিকে অর্থ দিতে ব্যাংকগুলোর গড়িমসি এবং সুদ না দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা এল।
গত বছর হাই কোর্টের ওই রায়ে বলা হয়েছিল, সঞ্চয়পত্রের মালিক মারা গেলে নমিনি যিনিই হন, অর্থের মালিক হবেন মৃতের উত্তরাধিকাররা।
রায়টি আপিল বিভাগ স্থগিতের পরও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নমিনিকে পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নমিনিকেই অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
রোববার পুনরায় তাগিদ দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক; তাতে নমিনিকে সুদসহ অর্থ বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মৃত গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব সঞ্চয়ী হিসাব (সেভিংস একাউন্ট) হলে নমিনি যখন টাকা তুলতে যাবেন তখন ওই হিসাব বন্ধ করে তাকে ব্যাংকের নির্ধারিত সুদসহ পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে ব্যাংককে।
আর মৃত গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব যদি মেয়াদি হিসাব (ফিক্সড ডিপোজিট) হয় তাহলে ওই হিসাব মেয়াদ পূর্তির পর নমিনিকে চুক্তি অনুযায়ী সুদ-আসল পরিশোধ করতে হবে।
এফডিআরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর নমিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়াসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে যে সময় লাগবে, সেই সময় পর্যন্ত সুদসহ পুরো অর্থ পরিশোধ করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মৃত আমানতকারীদের হিসাবে রক্ষিত আমানত পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৯৮৪ সালের ২৭ মে জারি করা সার্কুলারের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে, যেখানে সুদসহ পরিশোধের কথা রয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল জারি করা সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, আমানতকারীর মৃত্যুর পর নমিনিই ব্যাংকে জমানো অর্থ পাবেন। অন্য কাউকে জমানো অর্থ দিতে পারবে না ব্যাংক।
ওই নির্দেশনা দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, কোনো কোনো ব্যাংক হিসাব খেলার সময় নমিনির কাছ থেকে এমন অঙ্গীকার নিচ্ছে যে, আমানতকারী বা আমানতকারীদের মৃত্যুর পর মনোনীত নমিনি মৃত ব্যক্তির আমানতের অর্থ পাওয়ার যোগ্য বা উপযুক্ত প্রাপক হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারেন।
নমিনি আমানতের অর্থ প্রাপ্য নাও হতে পারেন এমন অঙ্গীকার নেওয়াকে ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ (২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১০৩ ধারার নির্দেশনার পরিপন্থি বলে তখন বলা হয়েছিল।