আগামী কোরবানির ঈদ পর্যন্ত হাজারীবাগে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে করা ট্যানারি মালিকদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 29 Mar 2017, 04:45 PM
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চ আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার এই আদেশ দেয়।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রথম দিনের শুনানি হয়েছিল। ওইদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার উপমা বিশ্বাস এবং অ্যাডভোকেট স্বপ্নীল ভট্টাচার্য।
বুধবারের শুনানিতে ছিলেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আজকে আদালত তাদের সময় বাড়ানোর আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।”
হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের বারবার তাগাদা সত্ত্বেও বেশিরভাগ ট্যানারি মালিক তাতে সাড়া দেননি।
এর মধ্যে পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) করা রিট আবেদনে গত ৬ মার্চ হাজারীবাগে থাকা সব ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধের আদেশ দেয় হাই কোট।
আদেশে বলা হয়, আদালতের নির্দের্শনা না মেনে এবং সরকারের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরও যেসব ট্যানারি কারখানা তাদের হাজারীবাগে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ থাকবে।
হাই কোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আপিল করলেও হাই কোর্টের আদেশই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
এরপর গত ২৩ মার্চ ওই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে ট্যানারি মালিকদের এই দুই সংগঠন।
আবেদনের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “তারা হাই কোর্টে যে আবেদন নিয়ে এসেছিল, সেটির মোদ্দা কথা ছিল- গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে আগামী কোরবানির ঈদ পর্যন্ত যেন তাদের হাজারীবাগে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়।
“তাদের যুক্তি ছিল, আইনগত, অর্থনৈতিক এবং কারিগরি- কোনো প্রকার নোটিস না দিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্ট এগুলো বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। তাদের যুক্তি ছিল, হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোতে প্রচুর শ্রমিক নিয়োজিত এবং বিদেশ থেকে তারা প্রচুর অর্ডার পেয়েছে। ফলে, এগুলো বাস্তবায়ন করতে কিছুদিন থাকার প্রয়োজন। তাদের যুক্তি ছিল সাভার (চামড়া শিল্প নগরী) এখনও প্রস্তুত নয়।”
শুনানিতে এসব যুক্তির বিরোধিতা করে রিজওয়ানা বলেন, তিতাস এবং পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ উভয়ই বলছে তারা প্রস্তুত আছে। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে দেখা যাচ্ছে, হাজারীবাগে যে সব ট্যানারি কারখানা এখনও আছে সেগুলোর পক্ষ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের কোনো আবেদনই করা হয়নি, টাকা জমা দেওয়া হয়নি এমনকি সাব স্টেশনও নির্মাণ করা হয়নি।
“আমাদের বক্তব্য, আপনারা হাজারীবাগেও সংযোগ রাখবেন, আবার সাভারেও সংযোগ রাখবেন- তা হবে না। স্থানান্তরিত করতে হবে…. হ্যাঁ, সাভার সম্পুর্ণভাবে প্রস্তুত নয়, কিন্তু সেখানে যা আছে তা দিয়ে দুষণ আটকে রাখা যায়। হাজারীবাগের মতো দুষণ ছড়িয়ে পড়বে না। তারা সেখানে না যাওয়া পর্যন্ত সাভার সম্পুর্ণভাবে প্রস্তুত হবে না।”