দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু মার্চে

ইন্টারনেট আরও সহজলভ্য করতে মার্চ থেকে বাংলাদেশে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।

শামীম আহমেদ পটুয়াখালী থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2017, 12:31 PM
Updated : 1 March 2017, 12:31 PM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, মার্চের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিক এ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

বুধবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটা মাইটভাঙ্গা এলাকায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।  

গত ২১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হয় বাংলাদেশ।

ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনের ট্রান্সমিশন লিংক সম্পূর্ণ হয়েছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষা করে এ সংযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার পর বরিশাল, খুলনা, ফরিদপুর, পটুয়াখালীসহ এ অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা আরও স্বল্পমূল্যে দেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

২০১৬ সালের শেষ নাগাদ দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কেবল স্থাপনের কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে তা হবে বলে জানিয়েছিল বিএসসিসিএল।

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেসিস) ট্রান্সমিশন লিংকের কাজ শেষ করেছে।

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইডথের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে এবং এর ফলে ইন্টারনেটের দাম আরও কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মনোয়ার।

নতুন এ সাবমেরিন কেবলের মেয়াদকাল ২০ থেকে ২৫ বছর হবে বলে জানান তিনি।

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে সংযুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত ১ হাজার ৫০০ গিগাবাইটের (জিবি) বেশি ব্যান্ডউইডথ পাচ্ছে বলে জানান মনোয়ার।

এর আগে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন কেবল ‘সি-মি-ইউ-৪’ এ যুক্ত হয়, যার মাধ্যমে প্রায় ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ পাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।

সি-মি-ইউ-৪ ছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে ছয়টি বিকল্প সাবমেরিন কেবল (আইটিসি বা ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেবল) সংযুক্ত রয়েছে।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০০ জিবিপিএসের বেশি। এই ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বিএসসিসিএলের মাধ্যমে আসে। বাকি ২৮০ জিবিপিএস আইটিসির ব্যান্ডউইডথ, যা ভারত থেকে আমদানি করা হয়।

নতুন সাবমেরিন কেবলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ কী করা হবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা রপ্তানির উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ভুটান, নেপাল, ভারতের সেভেন সিস্টারসহ মালয়েশিয়া, মিয়ানমারে রপ্তানির চেষ্টা করা হচ্ছে।”

একটি কনসোর্টিয়ামের আওতায় সি-মি-ইউ-৫ সাবমেরিন কেবলে দক্ষিণ-এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের ১৭ দেশ সংযুক্ত হচ্ছে।

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপনে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে এই কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযুক্ত হতে মোট ৬৬০ কোটি টাকা প্রকল্পের খরচ ধরা হলেও ৬০০ কোটি টাকার মধ্যেই এ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে বলেও জানানা মনোয়ার হোসেন।