ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাস নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফোন অপারটেরদের ভ্যাস সেবায় রাজস্ব ভাগাভাগি কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
Published : 29 Jun 2016, 09:58 PM
বুধবার বিটিআরসি সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জুলফিকার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি অপারেটরদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, “যুগোপযোগী ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (ভ্যাস) গাইডলাইন প্রণয়নকল্পে প্রয়োজনীয় খসড়া বর্তমানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিবেচনাধীন রয়েছে।
“ভ্যাস গাইডলাইন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বিদ্যমান রেভিনিউ শেয়ারিং এর হার অপরিবর্তিত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”
গত ২২ জুন ডাক ও টেলিযোগাযাগ প্রতিমন্ত্রী তারান হালিম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাস নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফোন অপারটেররা ভ্যাস সেবায় রাজস্ব ভাগাভাগি কাঠামোয় কোনো পরিবতর্ন আনতে পারবে না।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি শিগগিরই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে পাঠানো হবে এবং বিটিআরসি সেই প্রস্তাব চূড়ান্ত করে টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো মাত্রই তা চূড়ান্তভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
বিটিআরসি’র এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি অপারেটররা ভ্যাস সেবায় কনটেন্ট প্রোভাইডারদের সাথে রাজস্ব ভাগাভাগি কাঠামোয় পরিবতর্ন আনার ঘোষণা দেয়।
ভ্যাসের জন্য যারা কনটেন্ট সরবরাহ করছে, তাদের অংশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০ থেকে ১৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেয় অপারেটররা।
গত মে মাসে ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাস নীতিমালা চূড়ান্ত করতে সাধারণ ও স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিতে বিটিআরসি’র ওয়েবসাইটে খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
‘টেলিকম ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস ২০১৬’ নামে এই নীতিমালা করা হয়েছে।
২০১২ সালেও ভ্যাস নীতিমালা চূড়ান্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছিল বিটিআরসি, তবে অপারেটরদের বাধার মুখে তা আলোর মুখ দেখেনি।
বর্তমানে দেশে শিল্পী বা কবি বা গেমস প্রস্তুতকারীরা (কনটেন্ট প্রোডিউসার) পণ্য তৈরি করে কনটেন্ট প্রোভাইডারদের হাতে তুলে দেন। ওয়েলকাম টিউন, ক্রিকেট স্কোর, স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং তাৎক্ষণিক খবর ইত্যাদি সেবা কনটেন্ট প্রোভাইডাররা মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিক্রি করেন। অপারেটররা গ্রাহকের কাছে ভ্যাস সেবা পৌঁছে দেয়।
তবে ভ্যাস সেবায় ন্যায্যমূল্য পরিশোধে গড়িমসি, সৃজনশীলতা চুরিসহ অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ করে আসছে কনটেন্ট প্রোভাইডাররা।
খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, ভ্যাস সেবায় ১০ বছর মেয়াদি লাইসেন্স দেওয়া হবে কনটেন্ট প্রোভাইডারদের। ভ্যাস প্রোভাইডারদের সাথে রাজস্ব ভাগাভাগির বিষয়টিও নিদিষ্ট করে দেবে বিটিআরসি।
এছাড়া ভ্যাস প্রোভাইডারদের অনুমতি ছাড়া অপারেটররা নিজেদের উদ্যোগে ভ্যাস সেবাও দিতে পারবে না। তবে ভ্যাস প্রোভাইডাররা যে ভ্যাস সেবা দিতে পারবে না, তা অনুমতি নিয়ে দিতে পারবে মোবাইল অপারেটররা।