সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমার পরিমাণ বাড়ার খবরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের দেশে টাকা রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 13 Oct 2015, 09:23 PM
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের প্রতি এ আহ্বান তিনি।
বাংলাদেশে টাকা রাখলে বেশি সুদ পাওয়া যায় বলেও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ব্যবসা করি না, ব্যবসা বুঝি না, ব্যবসা জানিও না।”
“কিন্তু দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে যা যা করার, তা করে যাচ্ছি।”
এরপর প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “টাকা বাংলাদেশে রাখেন। সুদ এখানে বেশি পাওয়া যায়।
“দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে।”
সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ২০১৪ সালে জমা করা টাকার পরিমাণ তার আগের বছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেড়েছে বলে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বরাত দিয়ে এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বিভিন্ন সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জমা করা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ২৮৩ কোটি টাকা, যেখানে তার আগের বছর ছিল তিন হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। আর ২০১২ সালে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৯১ কোটি টাকা।
‘চ্যাম্পিয়ন্স অফ দি আর্থ’ ও ‘আইটিইউ’ পুরস্কার জয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এই সংবর্ধনা দেয় এফবিসিসিআই।
শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিবেশের দিকে নজর দেওয়ার জন্য ব্যবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আপনারা শিল্প কারখানা গড়ে তোলেন। জমি পছন্দ করেন। জমিটা নিতেই হবে।
শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্য নদীতে ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না করেই ঢাকায় ‘বড় বড়’ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ সব বিষয়ের দিকে নজর দেওয়ার তাগাদা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।”
কৃষিজমি রক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, “আমরা কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে।”
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকা আরও বাড়ানো সম্ভব-মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের অনেক রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। সেভাবে গবেষণা করে শিল্প গড়ে তুললে রপ্তানি অনেক বাড়বে।”
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, নাগরিকদের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৩১৪ ডলার থেকে আরও বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা আয় বৈষম্য হ্রাসের দিকে নজর দিয়েছি। বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না, না খেয়ে থাকবে না।”
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিধারা অব্যাহত রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য বলে জানান সরকার প্রধান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।
লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত সম্মাননাপত্র পাঠ করেন অভিনেত্রী শমী কায়সার।
পরে এফবিসিসিআইয়ের নেতারা শেখ হাসিনার হাতে সম্মাননাপত্রটি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতির পাশাপাশি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, এক নম্বর সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সহ-সভাপতি মাহবুবুল আলম বক্তব্য রাখেন।