পুত্র সন্তান হয়েছে নায়েক আবদুর রাজ্জাকের; তবে এতে আনন্দ নেই নাটোরে তার পরিবারে, তাদের উদ্বেগ মিয়ানমারে আটকে থাকা এই বিজিবি সদস্যের জন্য।
Published : 21 Jun 2015, 09:05 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে গোলাগুলির পর গত বুধবার রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপি।
নানামুখী আলোচনা হলেও এই বিজিবি সদস্যকে ছেড়ে না দেওয়ার মধ্যে রোববার সকালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী আসমা বেগম। এটি এই দম্পতির তৃতীয় সন্তান।
সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ির তোফাজ্জল হোসেন তারা মোল্লার ছেলে রাজ্জাক ২১ বছর ধরে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে রয়েছেন। তার অন্য দুই সন্তানের মধ্যে রাকিবুল ইসলাম সপ্তম শ্রেণিতে এবং ফারিয়া জাহান রিতু চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
তারা মোল্লা জানান, নাতি হওয়ায় আনন্দ তারা করতে পারছেন না ছেলের জন্য দুর্ভাবনার জন্য, যদিও মা ও নবজাতক দুজনই ভাল আছে।
“এখন আনন্দের চেয়ে কষ্টই বেশি,” বলেন তিনি।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রাজ্জাকের বোন তসলিমা খাতুনসহ পরিবারের সবাই কাঁদছেন। তার মা বুলবুলি বেগম কাঁদতে কাঁদতে মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন। ছেলে রাকিব ও মেয়ে ফারিয়া ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে, আর বলছে বাবার কথা।
তারা মোল্লা জানান, গত সোমবার ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। তখন জানিয়েছিল যে ছুটি পেলে রোববারই বাড়িতে ফিরবে।
সেই রোববারে পৃথিবীতে এল রাজ্জাকের সন্তান। তবে চার দিন ধরে মিয়ানমারে আটকে থাকা রাজ্জাকের ফেরার জট খোলার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, উল্টো বিজিপির ফেইসবুক পাতায় তার হাতকড়া পরা ছবি দেখে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
তারা মোল্লা বলেন, রাজ্জাককে ধরে নেওয়ার পর বিজিবি শুরুতে কিছু না জানানোয় তাদের উদ্বেগ ছিল, এখন পত্রপত্রিকায় ছবি দেখে তা আরও বেড়েছে।
তিনি জানান, অপহরণের পরদিন বিজিবির সিও ফোন করেন তাকে। তখন পতাকা বৈঠক করে একদিনের মধ্যেই রাজ্জাককে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু চার দিনেও কোনো অগ্রগতি না দেখে হতাশ তারা।
রাজ্জাককে ধরে নেওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। তাকে দ্রুত ফেরত পাঠাতেও বলা হয় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে।
পতাকা বৈঠকের উদ্যোগ চলছে বলে বিজিবি টেকনাফ ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ শনিবারও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে ফেরত দিতে বিজিপি রাজি হয়েছে। এ নিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় পতাকা বৈঠকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিজিপি।”