অবমাননার দায়ে ব্রিটিশ নাগরিক ও সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের দণ্ড হওয়ার পর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া ৫০ জনকে তাদের ‘আচরণের’ ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
Published : 14 Jan 2015, 03:33 PM
আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের এই ব্যাখ্যা দাখিল করতে হবে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দেয় বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি জানান, ৫০ নাগরিকের মধ্যে ১১জন দেশের বাইরে অবস্থান করায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ আদেশের অনুলিপি তাদের পাঠাতে বলা হয়েছে।
যেসব দেশে তারা অবস্থান করছেন, সেসব দেশে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে তাদের ব্যাখ্যা সংগ্রহ করে একই সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে হবে।
গত ২ ডিসেম্বর আদালত অবমাননার অভিযোগে বার্গম্যানের সাজার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল-২।
এরপর ২০ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলো ৫০ নাগরিকের উদ্বেগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। একই আদলে গত ২৩ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্ক টাইমসও একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে।
ওই সংবাদগুলো ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি কটাক্ষ’ বলে মনে হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল প্রথম আলোর কাছে ওই বিবৃতির ‘পূর্ণাঙ্গ কপি’ দেখতে চায়।
সে অনুযায়ী প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ ওই ৫০ নাগরিকের পক্ষে বিবৃতি পাঠানো হানা শামস আহমেদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় ও ঠিকানা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে। প্রথম আলো জানায়, গত ১৮ ডিসেম্বর হানা শামসই ই-মেইলের মাধ্যমে ওই বিবৃতি পাঠায়।
বুধবার বিবৃতিদাতা ৫০ নাগরিকের মধ্যে ৪৯ জনের পরিচয় ও ঠিকানা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক।
৫০ নাগরিকের মধ্যে মানবাধিকার কর্মী ও নারীনেত্রী খুশি কবির পরে বিবৃতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন জানিয়ে নিজের নাম সরিয়ে নেন।
রেজিস্ট্রার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ব্যাখ্যা দাখিল হলে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী আদেশ দেবে।
বিবৃতিদাতারা হলেন-
১. সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক
২. সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী
৩. যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের শিক্ষক আলী রীয়াজ
৪. সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান
৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ
৬. নারী অধিকারকর্মী শিরীন হক
৭. স্বাস্থ্য অধিকারকর্মী জাফরুল্লাহ চৌধুরী
৮. আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন
৯. সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার
১০. পরিবেশ আন্দোলনকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
১১. অধ্যাপক পারভিন হাসান
১২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সি আর আবরার
১৩. ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ফিরদাউস আজিম
১৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক আমেনা মহসিন
১৫. নারী গ্রন্থ প্রবর্তনার নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার
১৬. প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ
১৭. মানবাধিকার আইনজীবী ফস্টিনা পেরেইরা
১৮. অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক বীণা ডি কস্টা
১৯. লেখক শাহীন আক্তার
২০. সাংবাদিক ও লেখক আফসান চৌধুরী
২১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল
২২. নৃ-বিজ্ঞান গবেষক রেহনুমা আহমেদ
২৩. আলোকচিত্রী শহীদুল আলম
২৪. সাংস্কৃতিক কর্মী লিসা গাজী
২৫. দিনা এম সিদ্দিকী
২৬. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ
২৭. সাংস্কৃতিক কর্মী লুবনা মারিয়ম
২৮. বাংলাদেশ শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর ডা. নায়লা জামান খান
২৯. মানবাধিকারকর্মী জাকির হোসেন
৩০. লেখক তাহমিমা আনাম
৩১. সংগীত শিল্পী অরূপ রাহী
৩২. অধিকারকর্মী মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী
৩৩. জারিনা নাহার কবির
৩৪. আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক মো. নুর খান লিটন
৩৫. ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিয়া হক
৩৬. ড. শাহনাজ হুদা
৩৭. লেখক শবনম নাদিয়া
৩৮. লেখক মাহমুদ রহমান
৩৯. চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসরিন সিরাজ এ্যানি
৪০. ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিউতি সবুর,
৪১. সংগীত শিল্পী আনুশেহ আনাদিল
৪২. সারাহ শিহাবুদ্দিন
৪৩. অধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান
৪৪. আলাল ও দুলাল ব্লগের সম্পাদক তীব্র আলী
৪৫. নৃবিজ্ঞানী দেলোয়ার হোসেন
৪৬. মাসুদ খান
৪৭. অধিকারকর্মী রেজাউর রহমান
৪৮. অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান
৪৯. অধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ