রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারো রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
Published : 21 Nov 2014, 04:47 PM
দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার তাদের রাজশাহীর মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে নতুন করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
বিচারক শারমিন আক্তার আগামী রোববার রিমান্ড শুনানির রেখে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথমদফা জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে এই হত্যায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত হয়ে আবার রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।”
গত ১৫ নভেম্বর ক্যাম্পাস সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন লালনভক্ত শফিউল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক পরদিন মতিহার থাকায় একটি হত্যা মামলা করেন, যাতে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটকদের মধ্যে থেকে ১১ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত সোমবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
এরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবির, ওই কলেজের শিক্ষক ফজলুল হক, চৌদ্দপাই এলাকার পল্লী চিকিৎসক মোশারফ হোসেন, আব্দুল্লা আল মাহামুদ, মশিউর রহমান, হাসিবুর রহমান, জিন্নত আলী, সাইফুদ্দিন, রেজাউল করিম, সাগর ও আরিফ।
ওই রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শফিউল হত্যায় ‘জামায়াত নিয়ন্ত্রিত’ জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। আর এই ১১ আসামির সবাই জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত।
পরদিন আদালত দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
ওসি আলমগীর বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে অধ্যাপক শফিউল হত্যাকাণ্ডে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। সে তথ্যগুলো আরো যাচাই বাছাইয়ের জন্য তাদের আবারো রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।”
নিহত শিক্ষকের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিনও তার বাবার হত্যায় ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর জড়িত থাকার সন্দেহের কথা বলেছেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘণ্টা পাঁচেক পর আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে একটি ফেইসবুক পৃষ্ঠায় অধ্যাপক শফিউলকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাকে হত্যার দায়ও স্বীকার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ওসি আলমগীর বলেন, “আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ নতুন একটি সংগঠন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে।”
জামায়াত-শিবিরের ‘পলাতক ক্যাডাররা’ এ সংগঠনে জড়িত থাকতে পারে মন্তব্য করে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “পলাতক জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা যে গোপন তৎপরতা চালাচ্ছে, ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।