এরা হলেন- বাংলাদেশ বিমানের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এমদাদ হোসেন, প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিং প্রধান ক্যাপ্টেন আবু মোহাম্মদ আসলাম শহীদ, শিডিউল ম্যানেজার তোজাম্মেল হোসেন, উত্তরার ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুন অর রশিদ এবং বিমানের ঠিকাদার মাহমুদুল হক পলাশ।
গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মিনহাজুর ইসলাম বুধবার বিকালে ওই পাঁচজনকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
অন্যদিকে আসামিদের আইনজীবী অ্যাডভেকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু এর বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম এরফান উল্লাহ আসামিদের চার দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর, উত্তরা ও বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গত প্রায় দুই বছর ধরে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় প্রতিদিনই সোনার চালান ধরা পড়লেও এই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গত ১২ নভেম্বর বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে দুই কেজি ৬০০ গ্রাম সোনা ও ছয়টি আইপ্যাডসহ মাজহারুল আফসার নামের বিমানের এক কেবিন ক্রুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন দিনের রিমান্ডের পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বিমান কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাজহারুলকে গ্রেপ্তারের পর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক আবুল হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাতেই এমদাদসহ পাঁচজনকে রিমান্ডে পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক মইনুল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত শফিউল আজম নামের এক ব্যক্তি দুবাই থেকে চোরাচালানের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন। আর বিমানের ঠিকাদার পলাশ এ কাজের সমন্বয় করতেন।
“ঠিকাদার পলাশ বেশ প্রভাবশালী। তাকে আমরা ভোরে গ্রেপ্তার করি। এখনো তার সাথে কথা বলার সুযোগ হয়নি। আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে, আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখব।”
মনিরুল জানান, বিমান বালা থেকে শুরু করে বিমানের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের নাম এসেছে তাদের তদন্তে। পলাশের স্ত্রী নিজেও একজন বিমানবালা।
“গ্রেপ্তারকৃতরা ছাড়াও এ চক্রের সাথে জড়িত আরো বেশ কিছু নাম এসেছে। এগুলো যাচাই বাছাই করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”