মন্দিরে সেবায়েত নিয়োগকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
Published : 28 Oct 2014, 09:06 PM
ঢেমঢেমিয়া কালীর মেলার বৈরবাড়ী গ্রামে কালী মন্দিরের সেবায়েত নিয়োগ নিয়ে এই উত্তেজনা দেখা দেয়ায় বুধবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মনজুর।
মন্দিরের সেবায়েত দাবিদার জগদীশ সরকারের পক্ষে ঢেমঢেমি কালী মেলা পুজা কমিটি ও ধনেশ্বর চন্দ্র সরকারের পক্ষে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয় পুরাতন শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।
মন্দিরের সেবায়েত পদ নিয়ে ধনেশ্বর ও জগদীশের বিরোধের জেরে গত ২৩ অক্টোবর দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়, ভাংচুর করা হয় মন্দিরের প্রতিমা।
ধনেশ্বর চন্দ্র সরকার নিজেকে বৈধ সেবায়েত দাবি করে বলেন, “প্রশাসনের সহযোগিতায় জগদীশ চন্দ্র হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করেন। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
“এর প্রতিবাদে উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।”
অন্যদিকে জগদীশ চন্দ্র সরকার জানান, তিনি বংশানুক্রমে কালীমেলার সেবায়েত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু ধনেশ্বর পূজায় বাধা সৃষ্টি করে হামলা চালিয়েছে।
ওসির বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে মন্দিরে হামলা এবং ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে বীরগঞ্জ থানার ওসিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ধনেশ্বর সরকার।
মঙ্গলবার দিনাজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা হয়।
বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্ত করে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২৩ অক্টোবর রাত ১০টায় সেবায়েত দাবিদার জগদীশ চন্দ্র সরকার ও তার তিন ছেলেসহ অন্যরা বীরগঞ্জ থানার ওসি শওকত হোসেনের উপস্থিতিতে মন্দিরে ঢুকে পূজা পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করেন। তারা বাদীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
ঘটনার সময় হামলাকারীরা শিব মূর্তি ভাংচুর করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। ঘটনার সময় ওসি শওকত নীরব থেকে হামলাকারীদের সহায়তা ও সাহস যোগান।
ঘটনার পর বীরগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে ওসি শওকত হোসেন এজাহার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো বাদীকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে ওসি শওকত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মামলার বিষয় তিনি কিছু জানেন না।