বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে কাজ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 18 Oct 2014, 02:46 PM
একইসঙ্গে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে আরো বেশি অবদান রাখতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইতালির মিলানে শুক্রবার সন্ধ্যায় হোটেল মিলানোফিরোরিতে ইতালি আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণে অনেক অবদান রেখে যাচ্ছেন। তাদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।”
বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ যখনই কোনো সর্বনাশা পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে, তখনই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বিদেশে এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে প্রবাসী বাঙালিদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন আমাকে দেশে ফিরতে বাধা সৃষ্টি করেছিল তখনো প্রবাসীরা তার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।”
প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় ২০০১ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে ‘বাংলা ভাই’সহ জঙ্গিদের উত্থান, দুর্নীতি, মুদ্রা পাচার, ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা এবং আওয়ামী লীগ সাংসদ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন।
৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনে নাশকতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়েছে, মসজিদে আগুন দিয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, বাসে ও ট্রেনে আগুন দিয়েছে এবং পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যসহ সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করেছে।”
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়া এবং বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে চাকরি বহাল রাখার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় কার্যকর করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।”
ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির কথাও বলেন তিনি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, যোগাযোগ, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।”
ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি ইদ্রিস ফারাজির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনীল দাশগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক এম এ গনি এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ বক্তব্য রাখেন।
ইতালির বিভিন্ন অঞ্চল এবং স্পেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক প্রবাসী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।