রমনা বটমূলে বোমা হামলার মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়া আদালতের রায়ে সন্তোষ জানিয়েছে ছায়ানট, এক যুগ আগের যাদের অনুষ্ঠানে এই হামলা হয়েছিল।
Published : 23 Jun 2014, 06:55 PM
২০০১ সালে ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় নিহত হন ১০ জন। ওই মামলায় রায়ে সোমবার আটজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়।
এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ধানমণ্ডির ছায়ানট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সনজীদা খাতুন বলেন, “কী রায় হল, তা বড় ব্যাপার নয়। দীর্ঘকাল পরে যে একটি রায় হল, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে বিচার প্রক্রিয়া আইনের পথে চলল।
“এ ঘটনাটি ঘটার পর আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কারা এটি ঘটাতে পারে। আমরা কারো নাম বলিনি, কারণ তদন্ত করবে পুলিশ, বিচার করবে আদালত। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তাই মেনে নেব।”
এক যুগ আগের সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে দুঃখ পেয়েছিলাম। ঘটনাটি কেবল ছায়নটের ওপর বা কোনো ব্যক্তির ওপর আঘাত নয়, সেটি ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ওপরে আঘাত।”
পাকিস্তান আমলে বাঙালি জাতিস্বত্তার আত্মঅনুসন্ধানের উন্মেষ পর্বে শুরু হওয়া রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান কালে বাঙালির বর্ষবরণের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গে পরিণত হয়।
বাঙালি সংস্কৃতির মূলে আঘাত হানার প্রয়াসেই ছায়ানটের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়েছিল বলে মামলার তদন্তে উঠে আসে।
সনজীদা খাতুন বলেন, “যারা মারা গিয়েছিল, তাদের জন্য আমাদের হৃদয় শোকার্ত হয়েছিল তবে ভয় পাইনি।
“আমাদের শিশুরা বলেছিল, প্রতিবছর আমরা পহেলা বৈশাখ পালন করব। এটা আমাদের সাহস যুগিয়েছে।”
ছায়ানট সভাপতি বলেন, “পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে যে ব্যাপক পুলিশি প্রহরার ব্যস্ততা থাকে, তাতে স্বতঃফূর্ততা নষ্ট হয়। তবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। যারা প্রহরা দেয়, তারাও মন দিয়ে গান শোনে, এটা আমাদের ভালো লাগে।”
দণ্ডিতদের দণ্ড কার্যকর দ্রুত চান কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দ্রুত চাইলেও হয় না। আদালতে অনেক মামলা জমে থাকে, এটা নিয়ে কিছু বলার নেই।”
সরকার পরিবর্তন হলে রায় বাস্তবায়ন ঝুলে যাবে বলে মনে করেন কি না- প্রশ্ন করা হলে সনজীদা খাতুন বলেন, “এখানে আশংকার কিছু নেই, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না।”