মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে তিন দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে চট্টগ্রাম নগরী।
Published : 22 Jun 2014, 12:13 PM
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ভারী বৃষ্টির পর শুক্র ও শনিবারও বৃষ্টি হয়েছে। রোববার ভোর থেকে আবার শুরু হয়েছে টানা বর্ষণ। ফলে নতুন করে নগরীর বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
নগরীর প্রায় সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরবাসীর ভরসা এখন রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান ও টেম্পো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, বাজার সব জায়গায় এখন হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট মোড়, চকবাজার, বাদুরতলা, বাকলিয়া, কাপাসগোলা, চান্দগাঁও, হালিশহরের একাংশ, আগ্রাবাদের কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
শুক্র ও শনিবারের বৃষ্টিতে আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক, ব্যাপারি পাড়া, মিস্ত্রি পাড়া, দাইয়্যাপাড়া, বড়পোল, দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর, শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক জলাবদ্ধ হয়।
রোববার সকালে নতুন করে পোর্ট কানেকটিং সড়ক, এনায়েত বাজার, জুবিলি রোড, শেখ মুজিব সড়কের চৌমুহনী সংলগ্ন অংশ তলিয়ে গেছে।
নগরী দাইয়্যাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সজীব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই দিন ধরে পুরো এলাকা পানির নিচে। চলাচল করা কষ্টসাধ্য। সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০৫ মিলিটমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
আর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৬৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এই আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা সজীব হোসাইন বলেন, সঞ্চালনশীল মেঘমালার কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমি লঘুচাপটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ এবং সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর সম্প্রাসারিত অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রসারিত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরালো মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে।
এ কারণে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
তুমুল বর্ষণের সঙ্গে জোয়ার যোগ হওয়ায় শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ চলাচলও বিঘ্নিত হলেও রোববার ভাটা থাকায় জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের উপ-সংরক্ষক ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম জানান, রোববার বহির্নোঙ্গর থেকে পাঁচটি জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করেছে। বন্দর থেকেও পাঁচটি জাহাজ বহির্নোঙ্গরে গেছে।
“কন্টেইনার ওঠানামায় কোনো সমস্যা নেই। তবে বৃষ্টির কারণে কার্গোয় পণ্য ওঠানামা বিঘ্নিত হচ্ছে।”