রামেকের শিক্ষানবিশদের সনদ স্থগিতের চিন্তা

সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সনদ দেয়া স্থগিত রাখার চিন্তা করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2014, 07:19 AM
Updated : 22 April 2014, 08:59 AM

সাংবাদিকদের সঙ্গে সংঘাতের পর রাজশাহী ও ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্মবিরতিতে যাওয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলার একদিন পরই এ কথা জানালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মিজান উদ্দিন।

মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেডারেশন ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এ দাবি ওঠার পর উপাচার্য মিজান উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদভুক্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ডিগ্রি দিই আমরা। একটি ছাত্র সংগঠন ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এই সনদপত্র স্থগিত করার দাবি এসেছে।”

গত রোববার রাতে এক রোগীর স্বজনের সঙ্গে চিকিৎসকের হাতাহাতির খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের হামলায় ১০ সাংবাদিক আহত হন। ভেঙে ফেলা হয় বেসরকারি কয়েকটি টেলিভিশনের ক্যামেরা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের বিক্ষোভের পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

রাজশাহী বিশইবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মিজান উদ্দিন বলেন, “চিকিৎসকরা যদি জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাদের সনদ দেয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”

 

এদিকে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকায় রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসকের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোস্তাকিন বিল্লা জানান, তার অসুস্থ ভাইতে সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর বেলা ১২টা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসকের দেখা পাননি।

চিকিৎসকদের চেম্বারে গিয়েও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাটোরের বশির আহমেদের চোখের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো চিকিৎসকেরই খোঁজ নেই, বলেন তিনি।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগীকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

কর্মবিরতিতে যাওয়া চিকিৎসকদের সমন্বয়ক শেখ সাদি সাংবাদিকদের সঙ্গে সংঘাতের সময় তিন জন চিকিৎসক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদরা করতে হবে।”

 

এসব  দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনিদিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক আ.স.ম বরকতুল্লাহ জানান, শিক্ষানিবশ চিকিৎসকদের মঙ্গলবার সকালে কাজে দিতে বললেও তারা  যোগ দেয়নি।

নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা পরিচালক মহোদয় বলতে পারবেন।”

ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাতে ওই ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় মোট দেড়শ’ শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে।