বৃহস্পতিবার রাতে ছাড়া পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জবানবন্দি শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
এবি সিদ্দিক পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী। তিনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর মালিকানাধীন ফতুল্লার পোশাক কারখানা হামিদ ফ্যাশনসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
দুপুর আড়াইটার দিকে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সত্যি কথা বলতে কি আমি বেঁচে আসতে পারবো তা ভাবিনি। এখনো নিরাপদ বোধ করতে পারছি না। পরিস্থিতি বুঝেই চলতে হবে।”
এ সময় অপহরণের পুরো বর্ণনাও দেন পোশাক কারখানার কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক।
তিনি বলেন, “কারখানা থেকে গাড়িতে ঢাকায় ফেরার পথে বুধবার দুপুরের দিকে ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকায় একটি নীল রঙের হাই-এইস আমার গাড়িটিতে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। নেমে গাড়ির ক্ষতি হয়েছে কিনা তা দেখার সময় ৫/৬ জন ওই গাড়ি থেকে নেমে আমাকে জোর করে তুলে নেয়।
“ওই গাড়িতে তারা আমার হাত, পা, চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা গাড়ি চলার পর আমাকে বাঁধা অবস্থায় একটি বাড়ির মেঝেতে নিয়ে রাখা হয়।
“বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ওই বাড়ি থেকে বের করে আমাকে একটি গাড়িতে তোলা হয়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা গাড়ি চলার পর আনসার ক্যাম্পের আমাকে সামনে নামিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।”
তবে চোখ বাঁধা থাকায় তিনি কাউকে চিনতে পারেননি বলে জানান এবি সিদ্দিক।
এর আগে বেলা ১টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী আদালতে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেন তিনি।
অপহরণের প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর ছাড়া পেয়ে অটোরকিশায় ধানমণ্ডির সেন্ট্রাল রোডের বাসায় ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে কলাবাগানে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে পরিচয় নিশ্চিত করার পর ধানমণ্ডি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবি সিদ্দিককে।
শুক্রবার সকালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ। সেখানে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আদালতে জবানবন্দি গ্রহণের জন্য নেয়া হয়।
এবি সিদ্দিকের সঙ্গে তার মা ও স্ত্রী রিজওয়ানাও ছিলেন।
স্বামী অপহরণের ঘটনায় ইতোমধ্যে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন রিজওয়ানা হাসান। তার পেশাগত কাজে ক্ষিপ্ত হয়ে কেউ তার স্বামীকে অপহরণ করেছে বলে দাবি করেন পরিবেশ আন্দোলনের এই সংগঠক।
ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী রিজওয়ানা পরিবেশ ধ্বংসের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সক্রিয়, এই ধরনের অনেক মামলায় আইনি লড়াইও চালাচ্ছেন তিনি।