উদীচী বোমা হামলার বিচার ১৫ বছরেও শেষ হয়নি

যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ১৫ বছর পরও এর বিচার শেষ হয়নি।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2014, 12:25 PM
Updated : 6 March 2014, 12:25 PM

প্রথম পর্যায়ে মামলায় যশোরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আসামিদের খালাস দেয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবার বিচার কাজ শুরু হয়।

যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল কাদের জানান, মামলাটির কার্যক্রম গতিশীল করে দ্রুত নিস্পত্তির জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

এদিকে দিনটি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল মাঠে মশার প্রজ্জ্বলন শেষে এক প্রতিবাদী সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডি এম শাহিদুজ্জামান।

১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর  টাউন হল মাঠে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন। আহত হন দুশতাধিক নারী পুরুষ।

নিহতরা হলেন নূর ইসলাম, নাজমূল হদা তপন, সন্ধ্যা রানী ঘোষ, ইলিয়াস মুন্সী, শাহ আলম বাবুল, বাবুল সূত্রধর, শাহ আলম, বুলু, রতন রায় ও রামকৃষ্ণ।

যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল কাদের জানান, উদীচী হত্যাকাণ্ড মামলায় ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামসহ ২৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

ওই সময় তরিকুল ইসলামের আবেদনে হাইকোর্ট তার নাম বাদ দেয়। পরে ২০০৬ সালের ৩০ মে যশোরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলার ২৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়।

বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ন্যায়বিচার পেতে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুনর্তদন্তের আবেদন করলে মামলাটির বর্ধিত তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে।

আবদুল কাদের আরো বলেন, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নান ওই বছরের ১৯ নভেম্বর আদালতে উদীচী বোমা হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ হরকাতুল জিহাদের সদস্য বরিশালের আবুল হোসেন ও মাদারীপুরের মাওলানা আবদুর রউফকে আটক করে।

“আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন মহাজোট সরকারের দায়িত্ব পেলে নিম্ন আদালতের রায়ের (২০০৬ সালের রায়) বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত মামলায় খালাসপ্রাপ্তদের পুনরায় আত্মসমর্পণের জন্য সমন জারির নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত একটি আদেশ ২০১১ সালের ২০ জুন যশোর বিচারিক হাকিম আদালতে পৌঁছায়।”

এরপর ২১ জুন খালাসপ্রাপ্ত ২৩ আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত। এর মধ্যে তিন আসামির মৃত্যু হওয়ায় বাকি ছিলেন ২০ জন। এদের মধ্যে ১৭ জন বিভিন্ন সময়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। পরে এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম নামে এক আসামি এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুন হন।

আসামিদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম মিন্টা, শরিফুল ইসলাম লিটু ও সোহরাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করায় তাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৪ জুলাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। শফিকুল ইসলাম মিন্টা ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আটক হন। বর্তমানে তিনিও জামিন আছেন।