স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে ‘বাংলাদেশের করণীয়’ সম্পর্কে প্রণীত ‘কর্মপরিকল্পনা’ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
Published : 13 Aug 2013, 01:01 AM
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, ১০ বছর পরপর স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে নিয়ে জাতিসংঘ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সংক্রান্ত চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলন হয় ২০১১ সালে। ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে কীভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে আনা যায় তার উপায় খুঁজতেই এ কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে।
সচিব বলেন, এখানে স্বল্প , মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সরকারের ভিশন ২০২১ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এতে যে আটটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- উৎপাদন সামর্থ্য বাড়ানো; কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; শিল্প-বাণিজ্য; পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি; মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন; বহুমাত্রিক সঙ্কট ও উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ; উন্নয়নের সামর্থ্য সৃষ্টির জন্য অর্থের জোগান এবং সব পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চত করা।
মানব ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকেই জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত করেছে। দারিদ্র্য (মাথাপিছু আয়), মানবোন্নয়ন (পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সাক্ষরতার হার বিবেচনায়) এবং অর্থনৈতিক সামর্থ্য- এই তিনটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে দশ বছর পরপর স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হালনাগাদ করা হয়।
বর্তমানে আরো ৪৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এ তালিকায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ২০১৫ সালের মধ্যে এ তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে- এমন আশা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “পরপর দুই বার রিভিউ করার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া হবে।”
তিনি জানান, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে তিনটি সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৯২৩ ডলার, যাকে ১১৯০ ডলারে উন্নীত করতে হবে তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে।
বাকি দুটি সূচকের মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে ভাল অবস্থায় রয়েছে এবং মানব সম্পদ সূচকও উত্তরণের কাছাকাছি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন সচিব।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাতে থাকালে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায় উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা অনন্তকাল এ সুবিধা নিতে চাই না।”
তিনি জানান, এ কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে ২৭টি মন্ত্রণালয় নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া বছরে একবার কয়েকজন মন্ত্রী বসে এ বিষয়টি দেখবেন। কোন মন্ত্রণালয় কি কাজ করবে তাও এ কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।