বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০ টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে শুরু হওয়া এ সংলাপে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। চার নির্বাচন কমিশনারও আলোচনায় উপস্থিত রয়েছেন।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এর আগে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ধারাবাহিকভাবে এ সংলাপ করে যাব। আশা করি এর মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। সবার মতামত নিয়ে সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করে কমিশন প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।”
গণমাধ্যমের যে ৭১ জন প্রতিনিধিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে বৃহস্পতিবারের আলোচনায় অনলাইন, টেলিভিশন ও রেডিওর ৩৪ জনকে ডেকেছিল ইসি।
ইসির তালিকার ক্রমানুসারে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের মধ্যে বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক খায়রুল আনোয়ার, এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ জ ই মামুন, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, বাংলা ভিশনের হেড অব নিউজ মোস্তফা ফিরোজ, সময় টিভির বার্তা প্রধান তুষার আবদুল্লাহ, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন, মাছরাঙা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক রেজোয়ানুল হক রাজা, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, চ্যানেল ২৪ এর এডিটর ইনপুট তালাত মামুন, যমুনা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ফাহিম আহমেদ, ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, মোহনা টিভির বার্তা সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান, এসএ টিভির বার্তা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, দীপ্ত টিভির বার্তা সম্পাদক মাহমুদুল করিম চঞ্চল, এশিয়ান টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক বিল্লাল হোসাইন বেলাল, রেডিও টুডে’র বার্তা প্রধান সেলিম বাশার, ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমির খসরু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-উর-রশীদ সংলাপে উপস্থিত হয়েছেন।
আলোচ্য বিষয়
>> বিদ্যমান ইংরেজি আইন কাঠামো বিশেষ করে ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২ এবং দ্য ডিলিমিটেশন অব কনস্টিটিউয়েন্সিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬’ যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন।
>> বিগত নির্বাচনসমূহের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অবৈধ অর্থ এবং পেশি শক্তির ব্যবহার রোধে আইনি কাঠামো সংস্কার।
>> জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যা, সংসদীয় এলাকার আয়তন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ।
>> নির্বাচন প্রক্রিয়া যুগোপযোগী ও সহজ করতে আইনি কাঠামো ও প্রক্রিয়ার সংস্কার; প্রবাসী ভোটারদের ভোটদান নিশ্চিত করার বিষয়ে একটি আইনি কাঠামো তৈরি।
>> কর্ম পরিকল্পনার বিভিন্ন কাঠামোকে যুগোপযোগী করা।
>> নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ নিশ্চিত করা।
>> ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করা।
>> নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা।
>> সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনার বাইরে নতুন প্রস্তাব।
গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রথমদিনের সংলাপে আমন্ত্রিত ৩৭ জনের মধ্যে ২৬ জন উপস্থিত ছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যথাযথ পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে আস্থা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে গত ১৬ জুলাই দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও নারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির এই মতবিনিময়।
৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সংলাপ শুরু করে ইসি। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় শেষে ২৪ অগাস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
ধারবাহিক সংলাপে সব অংশীজনের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের কাছেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিইসি।