মোহাম্মদপুরে মাদ্রাসা ছাত্রদের সংঘর্ষের পর একজনের মৃত্যু

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের দু্ই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2017, 09:25 AM
Updated : 14 August 2017, 09:25 AM

নিহত মোজাফজ্জল হোসেন মোহাম্মদপুরের কাদেরিয়া তৈয়বিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল ৬টায় মোফাজ্জলের মৃত্যু হয়।

“নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য ডাকাকে কেন্দ্র করে রোববার রাতে মাদ্রাসার দশম শ্রেণির সঙ্গে নবম শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

তবে সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর মোফাজ্জলকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল নাকি অন্য কোনো কারণে- সে বিষয়ে তার সহপাঠী ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।

এদিকে সংঘর্ষের জের ধরে মোফাজ্জলকে হত্যা করা হয়েছে দাবি তার চাচা আবুল কালামের।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসার হোস্টেলে মাগরিবের নামাজের সময় দশম শ্রেণির ছাত্ররা নবম শ্রেণির ছাত্রদের নামাজের জন্য ডাকতে আসে। এ সময় নবম শ্রেণির কয়েকজন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করলে দুইপক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়।

ওই ঘটনার জের ধরে রোববার রাতে খাওয়ার পর দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ, আরিফ হোসেন, এমদাদ হোসেন ও আফজাল ফয়সাল এবং দশম শ্রেণির আজিজুল হক নামে পাঁচ শিক্ষার্থীও আহত হয়।

আহত পাঁচজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয় জানিয়ে মাদ্রাসার প্রধান কাজী আবদুল আলীম রিজভীর দাবি, মোফাজ্জলকে রোববার রাত দেড়টার সময় মাদ্রাসার একটি শৌচারাগারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মারামারির ঘটনার পর পরিস্থিতি যেন আরও জটিল না হয় সেজন্য আমরা নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আলাদা ভবনে রাখার ব্যবস্থা করি।

“এরই মধ্যে রোববার রাত দেড়টার দিকে আমাদের কাছে খবর আসে মোফাজ্জল নামে এক ছাত্রকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে খোঁজাখুঁজি করে দোতলার একটি কমন বাথরুমে ভেতর থেকে ছিটকিনি আটকানো অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখা যায় ভেতরে একটি ছেলে পড়ে আছে।”

তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান মাদ্রাসা প্রধান রিজভী।

তবে নিজেদের দোষ ঢাকতে শিক্ষকরা সত্যি কথা বলছে না বলে অভিযোগ করেন মোফাজ্জলের এক সহপাঠী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত, স্যাররা বাথরুমে পাওয়ার যে কথা বলছে তা ঠিক নয়।

“রাত পৌনে ১১টার দিকে ঘটনার পরপরই তার মাথায় পানি ঢালা হল। এক কাঠমিস্ত্রি তার মাথায় পানি ঢালে। এরপর শিক্ষকরা সবাইকে সরে যেতে বলে। এরপর তাকে নিয়ে চলে যায়। তাকে ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া হলে হয়তো সে বেঁচে যেত।”

এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড আখ্যায়িত করে মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”