কানাডার ভ্যাংকুভারের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার (ইউবিসি) পিটার এ অ্যালার্ড স্কুল অব ল থেকে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।
স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীদের সম্মানে বুধবার চ্যান শুন কনসার্ট হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে রুমানাও বক্তব্য রাখেন।
২০১১ সালের ৫ জুন ঢাকায় ধানমণ্ডির বাসায় স্বামী হাসান সাইদের নির্যাতনের শিকার হন রুমানা। ওই হামলায় নাকে ক্ষত হওয়ার পাশাপাশি দৃষ্টি শক্তি হারান তিনি।
দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর বহু বাধা আর জটিলতা মোকাবেলা করে দুই বছরের মাথায় ইউবিসি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এর পর আইন পড়া শুরু করেন তিনি।
সিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সতীর্থদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার জন্য রুমানা মঞ্জুরকে যখন মঞ্চে নেওয়া হচ্ছিল হাজারখানেক উপস্থিতির মধ্যে ছিল পিনপতন নিরবতা।
রুমানা সমবেতদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ওই ভয়াবহ হামলা, জীবনশঙ্কায় ফেলা হামলার ফলে আমি অন্ধ হয়েছি। এই পৃথিবীকে আমি আর দেখতে পাইনি।”
রুমানা বলেন, “হামলার পর অনেকেই আমাকে সাহায্য করেছে। তবে আমি যখন হারিয়ে গিয়েছিলাম তখন ইউবিসি আমাকে পথ দেখিয়েছে। ইউবিসি পরিবারের সমর্থন ছাড়া আইন পড়া আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।”
বিশেষ করে অ্যালার্ড ল স্কুলের ডিন ক্যাথরিন ডুভার্নকে ধন্যবাদ জানান রুমানা।
অনুষ্ঠানের পরে রুমানার প্রশংসা করে ডুভার্ন বলেন, “আজকের সকালটা ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। আমি কেঁদে দিয়েছিলাম। সে অনন্য, সে নিজের পথ নিজে তৈরি করেছে। আমি আরেকজন মানুষের কথা ভাবতে পারি না যিনি তার মতো সক্ষম হতে পারে।”
কনসার্ট হলের বাইরে রুমানাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন অনেকে, যারা পুরো কোর্সজুড়ে তার সঙ্গে ছিলেন। তার অনেক সহপাঠীরাই রুমানার পথপ্রদর্শক হিসেবে তাদের সময় দিয়েছেন।
ডুভার্ন বলেন, “রুমানা তার সহপাঠীদের উপর খুবই জোর ছাপ ফেলেছেন।”
ওই হামলার ঘটনায় তার স্বামী হাসান সাঈদ সুমনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কারাগারেই তার মৃত্যু হয়।
রুমানা বলছেন, বাংলাদেশে পারিবারিক নির্যাতন ও আইনি ব্যবস্থার বাস্তবতা উপলব্ধি করেই তিনি আইন বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিতে আগ্রহী হন।