সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের নীল দল; একই দিনে পৃথক দুটি প্যানেল জমা দিয়েছে তাদের দুই পক্ষ।
Published : 11 May 2017, 06:41 PM
বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে নীলদলের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাজমা শাহীন একটি প্যানেল জমা দেন।
আরেকটি প্যানেল জমা পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে।
একাধিক শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, প্রার্থিতা নিয়ে নীল দলের বৈঠকে হট্টগোলের পর বুধবার ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সম্মেলন কক্ষে তাদের দ্বিতীয় সভা বসে। সেখানে কিছু সমঝোতাও হয়ে আহ্বায়ক কমিটির নির্ধারিত ৪০ জনের নাম থেকে তা দাঁড়ায় ৩৭ জনে।
এরপর সেখান থেকে তালিকার প্রথম দিকের ৩৫ জনের নাম প্রার্থী হিসাবে বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ওই সভায় হয় বলে জানান শিক্ষকরা।
নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ (বৃহস্পতিবার) নাম জমা দেওয়ার আগে প্রার্থীদের তালিকা আমরা দেখতে চাইলে সেটা দেখানো হয়নি। নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাজমা শাহীন সিলগালা করে নিয়ে আসেন।
“সবসময় নামগুলো সবার সামনে ঘোষণা করে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার লুকিয়ে ফেলার কারণে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে কালকের সভার সিদ্ধান্ত উল্টে নাম বাদ কিংবা সংযুক্ত করা হয়েছে।”
সিলগালা করে নাম জমা দেওয়ার কারণে ৩৬ জন শিক্ষকের নাম দিয়ে আরেকটি প্যানেল জমা দেওয়া হয় বলে জানান অধ্যাপক সামাদ।
দ্বিতীয় প্যানেলের সব প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেননি অধ্যাপক সামাদও।
তিনি জানান, তাদের মধ্যে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক জিনাত হুদা, অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী রয়েছেন।
এই তালিকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য হারুনর রশীদ খান এবং পিএসসির সাবেক সদস্য এমরান কবির চৌধুরীও রয়েছেন বলে জানান আরেকজন শিক্ষক।
আলাদা প্যানেল দিলেও সমঝোতায় আগ্রহী বলে জানান অধ্যাপক সামাদ।
তিনি বলেন, “১৪ তারিখে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিন পর্যন্ত সময় রয়েছে। আমরাও চাই না এই বিভক্তি থাকুক। এর আগেই সমঝোতার ভিত্তিতে একটা জায়গায় নীল দল পৌঁছাবে।
“হয়ত দেখা যাবে, কারও কারও নাম দুটি প্যানেলেই আছে। যেমন, আমার নাম আগের দিনের সিদ্ধান্ত অনুসারে সিলগালা করা তালিকায় থাকার কথা।”
এ বিষয়ে জানতে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাজমা শাহীনের মোবাইল ফোনে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাজমা শাহীনের প্যানেলের প্রার্থী টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ণ বিভাগের অধ্যাপক আবু মো. শফিউল আলম ভূইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নীল দল বিভক্তি হয়নি। নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাজমা শাহীনের নেতৃত্বে যে প্যানেল সেটাই নীল দল। নীল দলে যুগ্ম-আহ্বায়কও এই প্যানেলে নির্বাচন করছেন।”
যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক আলী আক্কাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুটি প্যানেল জমা পড়েছে নীল দলের শিক্ষকদের মধ্য থেকে। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারব না।”
আগামী ২২ মে সিনেটে ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
নির্বাচনের জন্য বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাদা দলের ৩৫ জনের প্যানেলও বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আখতার হোসেন খান।
নাজমা শাহীনের নেতৃত্বে নীল প্যানেলের প্রার্থীরা
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক আবু মো. শফিউল আলম ভূইয়া, আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, আবুল মনসুর আহাম্মাদ, আ ক ম জামাল উদ্দীন, ইসতিয়াক মঈন সৈয়দ, এস এম আব্দুর রহমান, কাজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, তৌহিদা রশীদ, দেলোয়ার হোসাইন, বায়তুল্লাহ কাদেরী,মো. মাহাবুবুর রহমান, মুবিনা খন্দকার, মো. আফতাব আলী শেখ, মো আফতাব উদ্দিন,মো. আব্দুল আজিজ, মো. আব্দুস ছামাদ, মো. জিয়াউর রহমান, মো. ফজলুর রহমান, মো. মজিবুর রহমান, মোহাম্মাদ আলী আক্কাস, শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, সুপ্রিয়া সাহা, সুব্রত কুমার আদিত্য, হাসিবুর রশীদ, সহযোগী অধ্যাপক এস এম রেজাউল করিম, কাজী হানিয়াম মারিয়া, চন্দ্র নাথ পোদ্দার, জান্নাতুল ফেরদৌস,পাপিয়া হক, লাফিফা জামাল, সহকারী অধ্যাপক নুসরাত জাহান ও সায়মা খানম।
মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে নীল প্যানেলের প্রার্থীরা
অধ্যাপক মুহাম্মাদ সামাদ, মো. আনোয়ার হোসেন, সাদেকা হালিম, এ কে এম গোলাম রব্বানী, জিনাত হুদা, তাজিন আজিজ চৌধুরী, মো হারুনুর রশীদ খান, এমরান কবীর চৌধুরী, সৈয়দ মোহাম্মাদ শামছুদ্দিন, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শাহ মো. মাসুম, জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, শারমিন রুমি আলীম, মো. আসাদুজ্জামান, আবু সারা শামসু রউফ, সুব্রত কুমার সাহা, কে এম সাইফুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ শওকত আলী, গোবিন্দ চক্রবর্তী, আখতার হোসেন, এ কিউ এম মাহবুব, সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, মোহাম্মাদ ফিরোজ জামান, সীতেশ চন্দ্র বাছার, সৌমিত্র শেখর দে, সহযোগী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার, মোহাম্মদ বিললাল হোসেন, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাব্বীর আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক আবদুর রহিম, নাজির হোসেন খান, মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ও মো. মনিরুল ইসলাম।
বিএনপি-জামায়তপন্থি সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা
অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন খান, আব্দুস সালাম, এ টি এম জাফরুল আযম, এ এফ এম মোস্তাফিজুর রহমান, এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, এ বি এম শহিদুল ইসলাম, এস এম আরিফ মাহমুদ, গোলাম রব্বানী, দিলীপ কুমার বড়ুয়া, নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, মামুন আহমেদ, মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছনী, মোহাম্মদ এমরান কাইয়ুম, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, মো. আবদুল করিম, মো. আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন, মো নুরুল ইসলাম, মো. মাহব্বত আলী, মো. মাহফুজুল হক, মো. মোশারফ হোসাইন ভূঁইয়া, মো. মোর্শেদ হাসান খান, মো. লুৎফর রহমান, মো. শাহ এমরান, মো. হাসানুজ্জামান, মো. হুমায়ুন কবীর, লায়লা নূর ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ দাউদ খাঁন, মোহাম্মদ মামুন চৌধুরী, মো. আব্দুস সালাম আকান্দ, মো. ইসরাফিল প্রাং, মো. মহিউদ্দিন ও মো. সিরাজুল ইসলাম।