ঢাকায় জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণে জড়িতদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে সতর্ক রয়েছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
Published : 08 May 2017, 06:22 PM
আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে বনানী থানা পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিবির উপ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম।
গত শনিবার বনানী থানায় মামলাটি দায়েরের পর এখনও পাঁচ আসামির কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আসামিদের মধ্যে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ (২৬) রয়েছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে নাঈম আশরাফ (৩০) একজন ঠিকাদারের ছেলে, সাদমান সাকিফ (২৪) পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে। বাকি দুই আসামির একজন সাফাতের দেহরক্ষী ও অন্যজন গাড়িচালক।
মাস খানেক আগের ঘটনাটিতে ধর্ষণের মামলা হওয়ার পর তুমুল আলোচনার মধ্যে ডিবির উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, তারা এই মামলার ‘ছায়াতদন্ত’ করছেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে আসামিদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তদন্তের স্বার্থে আসামিরা কোথায় আছে, তা বলা যাবে না। তবে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।”
অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়ে নাজমুল বলেন, “আসামিরা যাতে দেশ ছাড়তে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।”
এখন পর্যন্ত কোনো আসামির দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য পুলিশের কাছে নেই বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
এর আগে যুদ্ধাপরাধের মামলার আসামি আবুল কালাম আযাদ (বাচ্চু রাজাকার) পুলিশের ‘নজরদারিতে’ থাকার মধ্যেই বিদেশি পালিয়ে যান।
আলোচিত মামলায় বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার নজির আরও রয়েছে। এর মধ্যে ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যামামলার আসামি বিএনপি নেতা এম এ কাউয়ুম, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের আসামি কাউন্সিলর নূর হোসেনও রয়েছেন। নূর হোসেনকে পরে ভারত থেকে ফেরত আনা হয়।
বনানীর ‘দি রেইনট্রি’ হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে দুই তরুণীর একজনের দায়ের করা মামলায় বলা হয়।
এজাহারে ধর্ষণকারী হিসেবে সাফাত ও নাঈমের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকি তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয় সহযোগী হিসেবে।
তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাফাতকে গ্রেপ্তারে তাদের গুলশান-২ নম্বরের বাসায় বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছেন তারা। তবে তাকে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সাফাত, নাঈম, সাদমান এবং ঢাকার একজন সংসদ সদস্যের ছেলে বনানী ১১ নম্বর সড়কে একটি রেস্তোরাঁ চালান। এছাড়া তাদের একাধিক সীসা বার রয়েছে।
মামলার বাদী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেয়ে ২৮ মার্চ এক বান্ধবীসহ তিনি ‘রেইনট্রি’ হোটেলে গিয়েছিলেন। সেখানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাতভর আটকে রেখে সাফাত ও নাঈম তাদের ধর্ষণ করেন।