বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বিল-২০১৬ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে তোলেন ওবায়দুল কাদের। পরে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী জেলায় কার্যকর হবে।
গত মার্চ মাসে বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর মন্ত্রি পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর বিআরটি নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় কাজ করার জন্যই এই আইন করা হচ্ছে।
বিলে বলা হয়েছে, বিআরটি আইনের আওতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে।
লাইসেন্স ছাড়া বিআরটি নির্মাণ ও পরিচালনায় ১০ বছর কারাদণ্ড, ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
এছাড়া অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর এবং অনুমোদন ছাড়া বিআরটি পাস ও টিকেট বিক্রি বা টিকেট জাল করলেও ১০ বছর কারাদণ্ড, ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
বিআরটির কোনো কর্মচারী এসব অপরাধ করলে তাকে দুই বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হবে।
বিলে বিআরটি বাস ও যাত্রীর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া বিআরটি বাস দুর্ঘটনায় পড়লে বাস ও যাত্রী ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা সম্পদের ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণের আগে কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন বা রাতারাতি সেখানে স্থাপনা তুললে ক্ষতিপূরণ পাবে না।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ভাড়া নির্ধারণে সরকার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেবে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এখানে কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া সাত সদস্যের কমিটি ভাড়া যাচাই করবে।
বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল আইন ও পায়রা বন্দর আইন বিশেষ বিধানের আদলে বিআরটির জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।”
গত ১ ডিসেম্বর বিআরটি নির্মাণে চীনের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
চীনের গেজহুবা গ্রুপ ৮৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ প্রকল্পের জন্য ১৬ কিলোমিটার বিআরটি লেইন, ৩২ কিলোমিটার ফুটপাত ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেইন নির্মাণ করে দেবে।
আগামী ৩০ মাসের মধ্যে এ নির্মাণ কাজ শেষে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার।