দেশের প্রথম বিআরটি নির্মাণে চুক্তি

ঢাকার যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর রুটে দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণে চীনের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2016, 11:44 AM
Updated : 1 Dec 2016, 01:29 PM
চীনের গেজহুবা গ্রুপ ৮৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ‌্যের এ প্রকল্পের জন‌্য ১৬ কিলোমিটার বিআরটি লেইন, ৩২ কিলোমিটার ফুটপাত ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেইন নির্মাণ করে দেবে।

আগামী ৩০ মাসের মধ্যে এ নির্মাণ কাজ শেষে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ও গেজহুবা গ্রুপের সাউথ এশিয়া শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঝেং টেবিং এ চুক্তিতে সই করেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠান।

গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক একরাম উল্লাহ  অনুষ্ঠানে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

>> প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ‌্য হবে ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড বিআরটি লেইন থাকবে। বাকি ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতলে। নির্মাণ করা হবে ছয়টি ফ্লাইওভার।

>> দুই প্রান্ত গাজীপুর ও বিমানবন্দরে থাকবে দুটি টার্মিনাল, আর মাঝের পথে হবে ২৫টি স্টেশন।

>> প্রতি দুই থেকে ৫ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৫০ মিনিট।

>> ১৮ মিটার দৈর্ঘের ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচল করবে এ পথে। বাস ভাড়া আদায় হবে ইলেক্ট্রনিক স্মার্ট কার্ডে।

গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু হলে টঙ্গী ও উত্তরার সঙ্গে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত সহজতর হবে এবং এর মধ্য দিয়ে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি আরামদায়ক সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

মূল নির্মাণের পাশাপাশি কিছু সড়ক প্রশস্তকরণ, সার্ভিস সড়ক ও গাজীপুরে তিন কিলোমিটার ড্রেনেজ নির্মাণ, আট লেইনের টঙ্গী সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণের খরচ মিলিয়ে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। সরকারের পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি দাতা সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) এতে অর্থায়ন করছে।
 

বুয়েটের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সম্প্রতি সংবাদমাধ‌্যমে আসা প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিআরটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হওয়ার কথা ১০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এই প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটারে ব‌্যয় হবে ১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। সেক্ষেত্রে গাজীপুর-বিমানবন্দর বিআরটিএ হবে বিশ্বের সবচেয়ে ব‌্যয়বহুল বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট।