টিকেটের জন্য ভিড় বেড়েছে কমলাপুরে

একদিন বিরতির পর কমলাপুর থেকে ট্রেনের আগাম ঈদের টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। আগাম টিকেট বিক্রির চতুর্থ দিন রোববার দেওয়া হচ্ছে ৪ জুলাইয়ের টিকেট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2016, 08:16 AM
Updated : 26 June 2016, 08:29 AM

শেষ সময়ে এসে কমলাপুরে বেড়েছে টিকেটপ্রত্যাশীদের ভিড়। স্টেশনের টিকেট কাউন্টাগুলোর সামনে প্রচণ্ড গরমেও  লোকজনকে অধীর আগ্রহে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

২৭ জুন বিক্রি করা হবে ৫ জুলাইয়ের আগাম টিকেট। ঈদের ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে ৪ জুলাই থেকে। 

ঢাকা থেকৈ চট্টগ্রামের পথে নতুন ট্রেন উদ্বোধনের কারণে শনিবার আগাম টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকলেও ওইদিন দুপুর থেকেই কাউন্টারে ভিড় করতে শুরু করেন অনেকে। সকাল ৮ থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়।

চট্টগ্রামের যাত্রী সেলিম চৌধুরী কাউন্টারে এসেছেন শনিবার ইফতারের আগে। সকাল সাড়ে ৯টায় তিনটি টিকেট পান তিনি। তাও তিন বগির তিনটি টিকেট দেওয়া হয় তাকে।

সেলিম বলেন "কিছুই করার নাই। যেতে তো হবে। ৩ জন আলাদা বগিতে যাব।"

তবে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় কাউন্টারে এসেও সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টিকেট হাতে পাননি রাজশাহীর মনিরুল ইসলাম রাজু।

টিকেটের অপেক্ষা দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে অনেকেই বসেন পড়েন

“আমার সিরিয়াল ৮৭। আশা করি টিকেট পাব,” আশা নিয়ে বললেন রাজু।

প্রচণল্ড গরমেও যাত্রীদের জন্য বাড়তি বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রংপুরের টিকেট কিনতে আসা নবাব হোসেন।

তিনি বলেন, "গতকাল সাতটায় এখানে আসছি। মানুষের ভিড়, তার ওপর ভ্যাপসা গরম। কয়েকটা ফ্যানের ব্যবস্থা করলে কি এমন ক্ষতি হইত?"

এদিকে এসি টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে। রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকেট কিনতে আসা মোহাম্মদ তুহিন জানালেন, যে সিরিয়ালের ১ নম্বরে ছিল সেও টিকেট পায়নি।

"রাজশাহীর তিনটা ট্রেন আছে। সবাই এসি টিকেট নেয়না। এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মতো লোক গেছে। এখনই বলছে টিকেট নাই।”

প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে টিকেটের লাইন

রংপুরের চারটি টিকেট নিতে এসে তিনটি পেয়েছেন আবু সাঈদ।

“একটা টিকেট কম দিল কেন জানতে চাইলাম, কথাই শুনল না,” হতাশ হয়ে বলেন সাঈদ।

টিকেট বিক্রির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, এসি টিকেট এমনিতে কম। বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টিকেটের কোটা থাকে। যদি কোনো স্টেশনের কোটা শেষ হয়ে যায় তবে অন্য স্টেশনের টিকেট নিয়েও যে কেউ যেতে পারে।

তিনি বলেন, “প্রতিদিন ১৮হাজার টিকেট বিক্রি হয়। এর বাইরেও যদি যাত্রীদের চাহিদা থাকে তাহলে আমরা ঈদের আগে আগে স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি করব।”

নারীদের কাউন্টারে বেশি ভিড়

কমলাপুর স্টেশনে মাত্র দুটি কাউন্টার থেকে নারীদের টিকেট বিক্রি করায় সেখানে ভিড় লেগে যায় বেশি। তার ওপর প্রচণ্ড গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে দেরিতে টিকেট দেওয়ার অভিযোগ করলেন কয়েকজন।

অবশেষে মিলেছে টিকেট

সিরাজগঞ্জের টিকেট কিনতে আসা মাসুমা আক্তার বলেন, “নারীদের জন্য আরও বেশি কাউন্টার দরকার ছিল।”

তবে বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেন স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু।

“এই বিষয়ে আমার কাছে খবর আসেনি, আসলে তো অন্য কাউন্টার থেকেও টিকেটের ব্যবস্থা করতাম।”

পাঁচ কালোবাজারি গ্রেপ্তার

এদিকে বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে আসেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

এ সময় তিনি জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও কালোবাজারি রোধে কমলাপুর, সদরঘাট এবং রাজধানীর বাস টার্মিনাগুলোতে র‌্যাবের নয়টি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে।

রোববার কমলাপুর থেকে ৫ জন টিকেট কালোবাজারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঈদের আগেই মাওয়া ও আরিচায় দু’টি করে র‌্যাবের চারটি ক্যাম্প স্থাপন করা হবে জানিয়ে বেনজীর বলেন, “কেউ যদি যাত্রীদের হয়রানি করতে না পারে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি।”

ঈদের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছেও বলে জানান তিনি।