মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মতিউর রহমান নিজামীর লাশ পাবনার সাঁথিয়ায় নিয়ে তার গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
Published : 11 May 2016, 01:30 AM
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের হোতা নিজামীকে বুধবার প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
জামায়াত আমির প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেননি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দণ্ড কার্যকরের আগে তার স্বজনরা কারাগারে গিয়ে শেষ দেখা করে আসেন।
মধ্যরাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর রাত দেড়টায় দুটি অ্যাম্বুলেন্স কারাফটক দিয়ে বেরিয়ে আসে, এর একটিতে ছিল জামায়াত আমিরের লাশ। সামনে-পেছনে ছিল র্যাব ও পুলিশের ছয়টি এবং কারা কর্তৃপক্ষের একটি গাড়ি।
কারাগার থেকে বেরিয়ে ফার্মগেইট, উত্তরা হয়ে বাইপাইল দিয়ে টাঙ্গাইল পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে পাবনার সাঁথিয়ায় যায় লাশবাহী এই গাড়ির বহর।
সাঁথিয়ার ধোপাদহ ইউনিয়নের মনমথপুরে গ্রামে সকাল সোয়া ৬টার দিকে পৌঁছায় লাশ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করেন নিজামীর ছেলে নাজিব মোমেন।
মনমথপুর মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে সকাল সাড়ে ৭টায় নিজামীকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ফাঁসির রায় কার্যকরের আগ থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। রাত ৯টার পর থেকেই সাঁথিয়া বাজার, মনমথপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নেমে আসে সুনসান নীরবতা। এলাকায় পুলিশি টহলও ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে কবরস্থান পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয় বলে সাঁথিয়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী নিজামী স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়ে সাঁথিয়া থেকে তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, তাকে মন্ত্রীও করা হয়েছিল।
বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে আলবদর নেতা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে এই বছরের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়। তা পুনর্বিবেচনায় নিজামীর আবেদন গত ৫ মে খারিজ হয়ে যায়।
একদিন বাদে বিকালে স্বজনদের দেখা করতে কারা কর্তৃপক্ষ ডেকে পাঠায়। এর মধ্যে কারা ফটকে নিরাপত্তা জোরদার করা হলে তা মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরুর ই্ঙ্গিত দেয়।
এরপর রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, দণ্ড কার্যকরের নির্বাহী আদেশ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দণ্ড কার্যকরের জন্য কাশিমপুর কারাগার থেকে জল্লাদ রাজুকে ঢাকার কারাগারে আনা হয়েছিল।