একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের হোতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় দুঃখের ভার হালকা হয়েছে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর।
Published : 11 May 2016, 12:13 AM
একাত্তরে ডা. আলীম চৌধুরীর মতো বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে দণ্ডিত জামায়াত আমির নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয় মঙ্গলবার রাতে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডা. আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে এই মুহূর্তটি দেখার প্রতীক্ষায় ছিলাম। কারণ দণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে এই ভয়ঙ্কর খুনি-পাপী বিদায় নিল।
“দীর্ঘদিন ধরে দুঃখের ভার বহন করে আসছিলাম। আমি একা নই বুদ্ধিজীবী পরিবারের সকল সদস্যরা সেই ভার থেকে হালকা হল।”
একাত্তরের আল বদর নেতা নিজামীকে বাংলাদেশের মন্ত্রী করার ক্ষোভও প্রকাশ করেন শ্যামলী নাসরিন।
“খালেদা জিয়ার আমলে ভয়ঙ্কর এই খুনিকে শাসন ক্ষমতায় বসানো আমাদের কষ্ট সহস্রগুণ বাড়িয়ে দেয়,” ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নিজামীর বিচারে সাক্ষ্য দেওয়া শ্যামলী নাসরিন বলেন, “আজ এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে দেশ দায়মুক্তির পথে আরও এক ধাপ এগোলো।”
একাত্তরে নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা জহিরউদ্দিন জালাল (বিচ্ছু জালাল) নিজামীর ফাঁসির এই দিনে স্মরণ করছেন শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই রায় কার্যকরের মাধ্যমে একাত্তরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে। বিশেষ করে আমরা স্মরণ করছি, শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে, যিনি এই বিচারের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তার আত্মাও শান্তি পাবে।”
নিজামীসহ অন্য সব যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জালাল।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে প্রসিকিউশনের সাক্ষী জালাল আরও বলেন, “শিবির অনেক ছেলেদের ব্যারিস্টার বানিয়ে নিয়ে এসেছে। এদের মেধা কখনও বাংলাদেশের কাজে আসবে না।
“এরা আদালতে নোংরা ভাষায় আমাদেরকে আক্রমণ করেছে। তাদের সেই ভাষা বাঙালির ভাষা হতে পারে না। এটা পাঞ্জাব-বেলুচিস্তানের ভাষা। এরা কীভাবে বাংলাদেশে আইন পেশায় থাকার সুযোগ পায়? এদেরকে যেন সেই সুযোগ না দেওয়া হয়।”