সাইবার নিরাপত্তা, নারীর প্রতি অবমাননাসহ দেশের প্রচলিত ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ সাপেক্ষে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারের অভিযোগ/অনুরোধ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
Published : 24 Jan 2016, 03:41 PM
সিঙ্গাপুর সফর শেষ করে দেশে ফিরে রোববার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
সেখানে ফেইসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা বলেন, “সিঙ্গাপুরে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাংলাদেশ যে কোনো বিষয়ে অনুরোধ পাঠালে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা তাদের পদক্ষেপ বা মতামত জানাবে।”
ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা কোনো চুক্তি নয়, আশ্বাস।”
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলি আহসান মো. মুজাহিদের চূড়ান্ত রায়ের দিন গত ১৮ নভেম্বর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ফেইসবুকসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। এর ২২ দিন পর গত ১০ ডিসেম্বর ফেইসবুক এবং পরবর্তীতে সব মাধ্যমই খুলে দেওয়া হয়।
এর মাঝে গত ৩০ নভেম্বর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন প্রতিমন্ত্রী। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সাড়ার পর ৬ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের তিন মন্ত্রী।
তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, “ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ সব অনুরোধসহ নারীর প্রতি সহিংসতামূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত ইউআরএল সরবরাহ করলে সে বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন বা তাদের কী মতামত তা জানাবেন।”
ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশে অ্যাডমিন রাখা নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ফেইসবুক জানিয়েছে, অ্যাডমিনগুলো ব্যবসা পরিচালনা ও প্রচার ছাড়া আর কিছু করছে না।
“এক্ষেত্রে অ্যাডমিন বসানো ফলপ্রসূ হবে না, বরং অ্যাডমিন বসানোর চেয়ে বাংলাদেশ যেন লাভবান হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এটিই করবে ফেইসবুক।”
বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় ফেইসবুক কোনো অফিস করবে কি না- জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, “তারা বাংলাদেশের ‘বিজনেস কেস স্টাডি’ করার কথা জানিয়েছেন। ব্যবসা পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”
ফেইসবুক ‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ বিষয়ক কোনো কর্মশালা আয়োজন করলে প্রতিনিধি পাঠানো, পর্ন পেইজের তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদি বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সফরকালে সিঙ্গাপুরে মাইক্রোসফট এবং গুগলের অফিসও পরিদর্শন করেন তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী জানান, মাইক্রোসফট কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারকে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহায়তা এবং সাইবার আক্রমণের পূর্বাভাস, মূল্যায়ন ও এ বিষয়ে তথ্য বিনিময়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, জীবনের নিরাপত্তা হুমকি সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট ও তথ্যের ক্ষেত্রে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ, ইউটিউবে আপত্তিকর বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘ফোকাল পয়েন্টগুলোয়’ কাজ করার কথা জানিয়েছে গুগল।
এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।