বেতন কাঠামোয় ‘অসঙ্গতি’ নিরসনে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলারা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।
Published : 11 Jan 2016, 10:30 AM
“প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যদি আমরা মাত্র ৫ মিনিটও বসি, তাহলেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব,” বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের এই নেতা।
ফেডারেশনের ডাকে সোমবার বাংলাদেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরুর পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা বলেন অধ্যাপক ফরিদ।
গত বছরের মাঝামাঝিতে অষ্টম বেতন কাঠামো প্রস্তাবের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা নানা কর্মসূচিতে নিজেদের ‘মর্যাদাহানি ও সুবিধা কমে যাওয়ায়’ আপত্তি জানিয়ে আসছিল।
তার মধ্যে গত মাসে বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে সরকার একটি কমিটি গঠন করে।
কিন্তু তাতেও দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন গত ২ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়।
ওই ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেতন কাঠামোর এক ব্যাখ্যায় শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের সময় এবং চাকরির বাইরে কাজের সুযোগের একটি তুলনা দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “তারা (আমলা) এখন আমাদের ৯টা-৫টা ডিউটি করার কথা বলছে। আমরা তো কেরানী না যে নয়টা-পাঁচটা ডিউটি করব। আমাদের অফিস তো ২৪ ঘণ্টা।
“আমাদেরকে নয় মাস ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিয়ে এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমলারা ইচ্ছা করেই এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ওরা ভাবছে ওরা কুলীন লোক, ওদের পর্যায়ে কাউকে দেওয়া যাবে না।”
গত ২ জানুয়ারি থেকে শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের দিকে যেতে চেয়েছিলেন জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদ বলেন, “সামনে কেবিনেট মিটিং থাকায় আমরা তখন সময় নিয়েছিলাম।
“কিন্তু এখন দেখছি, কেবিনেট মিটিংয়ের পর প্রধানমন্ত্রী সেই আমলাদের সঙ্গেই বৈঠক করলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ভুলভাবে বোঝানো হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করলেও কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এখনও যোগাযোগ করেনি বলে জানান অধ্যাপক ফরিদ।
ফেডারেশন কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণার পর এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অন্যদের সঙ্গে তুলনা করে শিক্ষকরা নিজেদের ‘ছোট করছেন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পেটে যখন ক্ষুধা থাকে তখন মানুষ অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়। যখন ক্ষুধার জ্বালা দূর হয়ে যায়, আর বেশি প্রাচুর্য পেয়ে যায়, তখন প্রেস্টিজ, ন্যায়, সম্মান, পদায়ন নানা কথা স্মরণে আসে। মনে হয়, একটু বেশি বাড়িয়ে ফেলেছি বেতনটা। সেজন্য এখন প্রেস্টিজ নিয়ে টানাটানি।”
অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ফেডারেশনের ডাকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকরা প্রশাসনিক কোনো দায়িত্বও পালন করছেন না।