ফাঁসির রায়ের পর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে কাশিমপুরে কারাবন্দি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও।
Published : 01 Oct 2015, 09:36 PM
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের সুরক্ষিত ওই কারাগারে পরোয়ানা পৌঁছায় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর তত্ত্বাবধায়ক সুব্রত কুমার বালা।
তিনি বলেন, “তা তাকে পড়ে শোনানো হয়। পড়ে শোনাতে আধা ঘণ্টা সময় লেগেছে।”
৬৬ বছর বয়সী সালাউদ্দিন কাদের ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। মানবতাবিরোধী চারটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকেও মৃত্যু পরোয়ানা শোনানো হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে তারও মৃত্যুদণ্ড হয়। বুধবার তাদের দুজনেরই আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার উভয়ের মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর বিকালে লাল সালুতে মুড়িয়ে তা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যান ট্রাইব্যুনালের দুই কর্মচারী।
এরপর কারা তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা দুটি মৃত্যু পরোয়ানা পেয়েছি। একটি পরোয়ানা মুজাহিদকে পড়ে শোনানো হয়েছে। অন্য পরোয়ানা কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এই পরোয়ানার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও। এর মধ্য দিয়ে শুরু হল দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া।
মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে। আসামিপক্ষের রায়ের কপি পাওয়া অথবা আসামিকে রায় শোনানোর মধ্যে যেটি আগে হবে,তখন থেকেই শুরু হবে এই দিন গণনা।
নিয়ম অনুযায়ী,মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবে। তবে রিভিউ আবেদন হলে তার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের ইস্যু করা কপি পেয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন এই দুই যুদ্ধাপরাধীর আপিল মামলায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন।
রিভিউ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “দুজনের মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের ইস্যু কপি পেয়েছি। রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হবে বলে লিখিতভাবে অবহিত করে রাষ্ট্রপক্ষকে (চিফ প্রসিকিউটর) নোটিস পাঠানো হয়েছে।”
দুই আসামির পক্ষ থেকে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হলে আবেদন দুটির মীমাংসা হলে সে অনুযায়ী সরকার পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে পাঠানো হবে এবং কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “আইন অনুযায়ী যেভাবে অগ্রসর হওয়ার কথা, আমরা সেভাবেই অগ্রসর হব।”