গত ৩০ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয়ে উপাচার্যপন্থি ছাত্রলীগকর্মীদের ওই হামলা থেকে নারী শিক্ষকরাও রেহাই পাননি।তাদের ধাক্কায় অধ্যাপক ইয়াসমীন হক মাটিতে পড়ে যান। এক শিক্ষকের গায়ে লাথি মারতেও দেখা যায় এক ছাত্রলীগকর্মীকে।
পরদিন অধ্যাপক ইয়াসমীন ও অধ্যাপক জাফর ইকবালের মেয়ে ইয়েশিম ইকবাল ও ছেলে নাবিল ইকবাল তাদের ফেইসবুক ওয়ালে এক পোস্টে এর তীব্র নিন্দা জানান।
ওই পোস্টে বলা হয়, “আমরা, ড. ইয়াসমীন হকের সন্তানেরা ৩০ অগাস্ট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তার প্রতি এই লেখার মাধ্যমে ধিক্কার জানাই।”
নিউ ইর্য়ক ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল শিক্ষার্থী ইয়েশিম ইকবাল ও ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামের ড. নাবিল ইকবাল শৈশবে সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে তাদের বেড়ে ওঠার স্মৃতিও স্মরণ করেছেন পোস্টে।
“শিক্ষকদের সন্তান হবার সুবাদে আমাদের সৌভাগ্য হয়েছিল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বড় হবার। সে জন্য আমরা খুব কাছ থেকে দেখে এসেছি শিক্ষকরা কেবল শিক্ষাদানের দায়িত্বপালনের ঊর্ধ্বে গিয়ে কতটা ভালবাসা আর আন্তরিক শ্রম দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের প্রতি। সে কারণে আমরা ভীষণ হতবাক যে কিছু ছাত্র এই ভালবাসা ও আন্তরিকতার প্রতিদান দিল শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলে।”
হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এখানে যে ছাত্ররা শিক্ষকদের উপর হামলা চালিয়েছে, তারা আমার ছাত্র হয়ে থাকলে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিৎ।”
তার দুই সন্তান ফেইসবুকে লিখেছেন, “আমাদের স্মৃতিতে যে ক্যাম্পাসের কথা মনে পরে, যেখানে আমরা বড় হয়েছি, সে একই ক্যাম্পাসের কিছু ছাত্র শিক্ষকদের উপর, আমাদের মায়ের উপর হামলা করতে পারে তা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
“আমরা শাবিপ্রবির শিক্ষকদের উপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
ড. ইয়াসমীন হকের সন্তানদের এই পোস্টে সংহতি, সহানুভূতি ও উদ্বেগ প্রকাশ করে অনেকেই তা শেয়ার করেছেন, মন্তব্য করেছেন।
জাফর ইকবালের বড় ভাই প্রয়াত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান ইংরেজিতে যা লিখেছেন, বাংলা তর্জমায় তা এরকম- “নাবিল ও ইয়েশিম, যা ঘটেছে তাতে তোমাদের উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই অপরাধ করে তারা পার পেয়ে যেতে পারে না।”