শাবিতে শিক্ষকদের পেটাল ছাত্রলীগ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে চড়াও হয়ে তাদের মারধর করেছে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2015, 06:36 PM
Updated : 30 August 2015, 06:36 PM

রোববার ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অন্তত সাতজন শিক্ষক সরকার সমর্থক সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র সৈয়দ সামসুল ইসলাম।

‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’ ব্যানারে আন্দোলনরত সরকার সমর্থক শিক্ষকদের একাংশের দাবি, উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়ার ইন্ধনে এই হামলা হয়েছে।

হামলার প্রতিবাদে সোমবার আধাবেলা কর্মবিরতি এবং প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন এই শিক্ষকরা।  

তবে অধ্যাপক আমিনুল তার সহকর্মীদের উপর চড়াও হওয়া ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দ্বারাই তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। শিক্ষার ‘পরিবেশ রক্ষায়’ সেখানে গিয়েছিল ছাত্ররা।

সকালের এই ঘটনা নিয়ে দিনভর বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা-প্রতিবাদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন দাবি করেছেন, হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছে, এই ঘটনার সঙ্গে সাংগঠনিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

এদিকে শিক্ষকদের উপর হামলকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সাবেক একদল ছাত্রনেতাও একই দাবি জানিয়েছে।

সিলেটের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গত কয়েক মাস ধরে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের একটি অংশ।

শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গত ১২ এপ্রিল থেকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’ ব্যানারে তারা নানা কর্মসূচি পালন করছেন।

তাদের এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ‘অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যের পক্ষে রয়েছেন সরকার সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ।

অচলাবস্থা কাটাতে দুই পক্ষের সঙ্গেই সম্প্রতি বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নিয়োগ, নতুন ব্যবস্থা চালু বা কাউকে নতুন কোনো পদে দায়িত্ব দিতে নিষেধ করে উপাচার্যের ক্ষমতা কার্যত খর্বও করা হয়েছে। তারপরও উপাচার্য পদ না ছাড়ায় শিক্ষকরাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষকদের অবস্থানে চড়াও ছাত্রলীগ

রোববার সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা ছিল আন্দোলনকারী শিক্ষকদের।

উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়া একই দিনে বিকাল ৩টায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এরই মধ্যে উপাচার্যকে সমর্থন দিয়ে আসা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা ব্যানার নিয়ে সেখানে যান সকাল সাড়ে ৭টার দিকে।

শিক্ষকদের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা

সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনের সামনে এলে ছাত্রলীগকর্মীরা ব্যানার কেড়ে নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকদের গলা ধাক্কা দিয়ে এবং মারধর করে সরিয়ে দেয়। এ ফাঁকে উপাচার্য ভবনে ঢুকে দোতলায় নিজের কার্যালয়ে চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানকে এ সময় হাত বিশেক দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

সিনিয়র সহসভাপতি আবু সাঈদ, সহ সভাপতি অঞ্জন রায় ও সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজকে হামলায় অংশ নিতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে আরও দেখা যায় কর্মী ধনী রাম রায়, আব্দুল বাতেন তন্ময়, আরিফুর রহমান রনি, আব্দুস সালাম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, জুয়েল, আরিফুর রহমান কেনেডি, ফয়সাল আহমদ, তমাল ও জাহিদকে।

উপাচার্যপন্থি হিসেবে পরিচিত প্রক্টর অধ্যাপক কামরুল হাসান ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার এ সময় দূরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তাদের কাউকে ছাত্রলীগকর্মীদের ঠেকানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়নি। 

জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন দুই পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে পাত্তা পাননি তিনি।

শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীরা এ সময় স্লোগান দিচ্ছিল- ‘শাবিপ্রবির মাটি/ছাত্রলীগের ঘাঁটি’।

লাঞ্ছিত অধ্যাপক ইয়াসমীন হক

উপাচার্য ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর ছাত্রলীগকর্মীরা শিক্ষকদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে নতুন করে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তাদের ধাক্কায় অধ্যাপক ইয়াসমীন হক মাটিতে পড়ে যান। এক ছাত্রলীগকর্মীকে এ সময় এক শিক্ষকের গায়ে লাথি মারতেও দেখা যায়। 

আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা সামসুল ইসলাম পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমাদের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। উপাচার্য ছাত্রদেরকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে।”

তিনি নিজে এবং অধ্যাপক ইয়াসমীন হক ছাড়াও মারধরের শিকার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গণি, অধ্যাপক এ ন ক সমাদ্দার, মোস্তফা কামাল মাসুদ, সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক উদ্দিন।

ইয়াসমীন হক সাংবাদিকদের বলেন, “এই যে পরিবেশ নষ্ট করা হল, এর জন্য ভাইস চ্যান্সেলরই দায়ী থাকবেন।”

সকালে হামলা করার জন্য উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাতে বৈঠক করেন বলেও অভিযোগ করেন পদার্থবিদ্যার এই শিক্ষক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপনারা তো সবই দেখছেন। আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। নো কমেন্টস।”

অন্যদিকে উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়া বলেন, শিক্ষকরা তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়ার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

শিক্ষকদের ওপর হামলার খবর ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে কয়েকজন সাংবাদিককেও ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়। 

যমুনা টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সারা দেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার না হওয়ায় আজ তারা এ ঘটনা ঘটাল।”

সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এ সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।

শিক্ষকদের মারধরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পার্থ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাধা দেওয়ার বিষয়টি সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত না। যারা যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে এতে অংশ নিয়েছে।”

আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিৎ: জাফর ইকবাল

শিক্ষকদের উপর হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে হাত দশেক দূরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচক্করে একাকী বসে ছিলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, যিনি ইয়াসমীন হকের স্বামী।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল ক্ষুব্ধ

 

হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে যে ছাত্ররা শিক্ষকদের উপর হামলা চালিয়েছে, তারা আমার ছাত্র হয়ে থাকলে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিৎ।”

জনপ্রিয় এই কল্পবিজ্ঞান লেখক জানান, তিনি সরাসরি শিক্ষকদের আন্দোলনে অংশ না নিলেও আন্দোলনকারীদের প্রতি তার ‘মায়া, ভালোবাসা’ আছে।

“তারা যে কারণে আন্দোলন করছে, আমি তা ১০০ ভাগ সমর্থন করি। এ উপাচার্য যোগদানের দু’মাস পর আমি তার সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ আমি দেখেছি, উনি মিথ্যা কথা বলেন। যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে, তার সঙ্গে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব না।”

হামলার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আজ আমার জীবনে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হল। আজ যা দেখলাম, আমার জীবনে এ ধরনের ঘটনা দেখব, তা আমি কখনও কল্পনা করিনি।”

জাফর ইকবাল বলেন, গলায় দড়ি দিয়ে না মরলেও ‘তীব্র মানসিক যন্ত্রণায়’ তাকে ভুগতে হচ্ছে।

“কীভাবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আমার শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতে পারল, আর আমাকে সেটা এখানে বসে বসে দেখতে হল!”

এই শিক্ষক অভিযোগ করেন, উপাচার্যই ছাত্রলীগকে শিক্ষকদের ওপর ‘লেলিয়ে’ দিয়েছেন।

“তিনি যদি মনে করেন, এভাবে আন্দোলন থামানো সম্ভব, তবে সেটা ভুল করছেন। শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন কোনো পদের জন্যে নয়, শাবিকে বাঁচানোর জন্যে।”

‘হামলাকারীদের’ পক্ষে উপাচার্য

ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অধ্যাপক আমিনুল হক ‘ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়’ বললেও শিক্ষকদের উপর হামলার কোনো অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেন।

অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া (ফাইল ছবি)

“হামলা তো আমার উপর হয়েছে। আমি কার কাছে বিচার চাইব? আমাকে কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমি একাডেমিক কাউন্সিল করতে এসেছি। শিক্ষকদের হামলায় আমি পায়ে ব্যথা পেয়েছি। শিক্ষকদের বাধায় আমি রাস্তা দিয়ে অফিসে প্রবেশ করতে পারিনি। আমাকে কাদা মাটি ও ঘাসের উপর দিয়ে হেঁটে আসতে হয়েছে।”

“শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়েছে- এই রকম কোনো অভিযোগ কোনো শিক্ষক আমার কাছে করেননি। এই রকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে এলে আমি অবশ্যই তার বিচার করব।”

হামলার শিকার শিক্ষকদের অভিযোগের পাল্টায় ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান প্রকাশ করে উপাচার্য আমিনুল হক বলেন, “ছাত্ররা এসেছে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে। তারা নিজ উদ্যোগে এসেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষকদের দায়ী করে তিনি বলেন, “আজ এই পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি। ধীরে ধীরে এই অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

দায় নিতে নারাজ ছাত্রলীগ

আক্রান্ত শিক্ষকরা ছাত্রলীগকর্মীদের দায়ী করলেও সে দায় নিতে নারাজ সরকার সমর্থিত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি। 

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছে, “হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কেউ না। একদল শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী ওই হামলা চালিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

কিছু শিক্ষার্থী শিক্ষকদের একটি পক্ষের হয়ে ‘গণ্ডগোল’ করেছে বলে দাবি করেন তিনি। আক্রান্ত শিক্ষকদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হামলাকারীদের ‘ভিসির পেটোয়া বাহিনী’ উল্লেখ করার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

তবে ঘটনাটিকে ‘ন্যক্কারজনক’ স্বীকার করে জাকির বলেন, “যেহেতু এ ধরনের একটি অভিযোগ (ছাত্রলীগের জড়িত থাকা) শোনা যাচ্ছে, তাই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকদের উপর হামলার ঘটনায় সংগঠনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, “হামলার ঘটনাটি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়।

শিক্ষকদের ঠেকাতে সক্রিয় ছাত্ররা

“ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনায় জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হামলার সময় উপস্থিতির বিষয়ে সঞ্জীবন বলেন, “সকালে ভিসি ভবনের সামনে ছাত্ররা জমায়েত হলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা আমাদের ডেকেছেন বলে আমি ও সাধারণ সম্পাদক সেখানে গিয়েছিলাম।”

হামলার ভিডিও ও ছবিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেখা যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব।”

শিক্ষকদের নতুন কর্মসূচি

হামলার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে সোমবার বিশ^বিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি, কালো ব্যাজ ধারণ এবং প্রতিবাদ মিছিল করবে শিক্ষকরা।

“এছাড়া উপাচার্য অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং তা আরও কঠোরতর হবে,” হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র সামসুল আলম।