শাবির ৩ নেতাকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ

শিক্ষকদের উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নেতাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছাত্রলীগ। 

ঢাকা ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2015, 06:38 PM
Updated : 1 Sept 2015, 01:48 PM

তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ ও অঞ্জন রায়, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আসায় তাদের তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর রোববার প্রশাসনিক ভবনে চড়াও হতে আবু সাঈদ, অঞ্জন রায় ও সবুজকে দেখা গিয়েছিল।

ওই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মধ্যে ‘আগাছা’ উপড়ে ফেলতে ছাত্রলীগের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানাল আওয়ামী লীগ সমর্থক সংগঠনটি।

সোমবার বিকালে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে ওই নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সিলেটের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে চড়াও হয়ে তাদের মারধর করেছে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী।

রোববারের ঘটনার পর আক্রান্ত শিক্ষকরা ছাত্রলীগকে সরাসরি দায়ী করেছিলেন। তাদের দাবি, উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়ার ইন্ধনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই হামলা চালিয়েছিল।

হামলার সময় ছাত্রলীগকর্মী ধনী রাম রায়, আব্দুল বাতেন তন্ময়, আরিফুর রহমান রনি, আব্দুস সালাম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, জুয়েল, আরিফুর রহমান কেনেডি, ফয়সাল আহমদ, তমাল ও জাহিদকে সক্রিয় দেখা গিয়েছিল।

তখন কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান।

শিক্ষকদের উপর চড়াও ছাত্রলীগকর্মীরা

হামলার প্রতিবাদে মিছিলে শিক্ষকরা

তবে রোববার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কেউ না। একদল শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী ওই হামলা চালিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও শিক্ষকদের উপর হামলায় সংগঠনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছিল।  

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, “হামলার ঘটনাটি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়।

“ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনায় জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হামলার সময় উপস্থিতির বিষয়ে সঞ্জীবন বলেন, “সকালে ভিসি ভবনের সামনে ছাত্ররা জমায়েত হলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা আমাদের ডেকেছেন বলে আমি ও সাধারণ সম্পাদক সেখানে গিয়েছিলাম।”

অন্যদিকে উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল তার সহকর্মীদের উপর চড়াও হওয়া ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে বলেন, শিক্ষার ‘পরিবেশ রক্ষায়’ সেখানে গিয়েছিল ছাত্ররা।