জ্বালাময়ী স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ট্রাম্পকে বাইডেনের আক্রমণ

৬৮ মিনিটের এ ভাষণে ট্রাম্পের নাম না নিয়ে ১৩ বার তাকে ‘পূর্বসূরি’ সম্বোধন করে কথা বলেন বাইডেন। ট্রাম্প গণতন্ত্রকে হুমকিগ্রস্ত করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2024, 12:51 PM
Updated : 8 March 2024, 12:51 PM

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার জ্বালাময়ী ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দিয়েছেন। এ ভাষণে তিনি নভেম্বরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডনাল্ড ট্রাম্পকে নানাভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন।

কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ৬৮ মিনিটের এই ভাষণে ট্রাম্পের নাম না নিয়ে ১৩ বার তাকে পূর্বসূরি সম্বোধন করে কথা বলেছেন বাইডেন। ট্রাম্পকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে বিষোদগার করেছেন তিনি। অভিযোগ করে বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প রাশিয়ার কাছে মাথা নত করে গণতন্ত্রকে হুমকিগ্রস্ত করছেন।

বাইডেন তার ভাষণের শুরুতেই বলেন, ঘরে-বাইরে গণতন্ত্র হুমকির মুখে রয়েছে। পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর প্রতিরক্ষা খাতে চাঁদা দিতে ব্যর্থ সদস্য দেশগুলোতে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়াকে উৎসাহিত করায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেন বাইডেন।

তিনি বলেন, “এখন আমার পূর্বসূরি, সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট, পুতিনকে বলছেন, আপনি যা চান তাই করুন। আমি মনে করি এটি আপত্তিকর, বিপজ্জনক। আর তা মেনেও নেওয়া যায় না।”

ভাষণে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার প্রসঙ্গ নিয়েও ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাইডেন।

তিনি বলেছেন, ওই সময় তিনি (ট্রাম্প) ‘সত্যের কবর রচনার’ চেষ্টা করেছিলেন। রিপাবলিকানরা ইতিহাস নতুন করে রচনা করার চেষ্টা নিয়েছিল। কিন্তু বাইডেন এমন কাজ করবেন না বলে জানান।

ট্রাম্প আমলে কোভিড মহামারী সামলানোর প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, “আমার পূর্বসূরি আমেরিকার জনগণের জন্য সবচেয়ে মৌলিক দায়িত্বটুকুও পালন করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, দেখভাল করার দায়িত্ব। এ ব্যর্থতা ক্ষমা করা যায় না।”

বার্ষিক এই স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে অভিবাসন, গর্ভপাত, গণতন্ত্র, অর্থনীতি, ইউক্রেইন এবং গাজা প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন বাইডেন। 

দেশবাসী ও সমর্থকদের কাছে বাইডেনের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই ভাষণ এক অনন্য সুযোগ। এ ভাষণকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার সামর্থ্য প্রমাণের একটি পরীক্ষা হিসাবেই দেখা হচ্ছে।

বাইডেন ভাষণে নেটো ও ইউরোপের নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখার অঙ্গীকারে পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেইন থেকে যুক্তরাষ্ট্র দূরে চলে গেলে ইউরোপ ঝুঁকিতে পড়তে পারে। “আমরা সরে যাব না।”

অভিবাসনের প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, সিনেটে দ্বিদলীয় অভিবাসন আইনকে সমর্থন করতে রিপাবলিকানদেরকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্প নির্বাচনী ফায়দার জন্য বিলের বিরোধিতা করেছেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদ পূরণের আগের সময়টিতে বাইডেন প্রশাসনের কৃতিত্বগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করে বাইডেন বলেন, তার পূর্বসূরি প্রায় ডুবতে বসা অর্থনীতি রেখে গিয়েছিলেন। সে অবস্থা থেকে বর্তমান অর্থনীতি অনেক চাঙ্গা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে এখন ঈর্ষণীয় বলে মন্তব্য করেন বাইডেন।

ইউক্রেইনে সামরিক সাহায্যের আহ্বান জানিয়ে ভাষণ শুরু করেছিলেন বাইডেন। আর তা শেষ করেছেন গাজার যুদ্ধ এবং সেখানকার মানবিক ত্রাণ সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের মধ্য দিয়ে।

গাজায় একটি সফল যুদ্ধবিরতি কাজ করছেন উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, এই যুদ্ধবিরতি অন্তত ৬ সপ্তাহ স্থায়ী হবে। একইসঙ্গে গাজায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে সেখানে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণের নতুন পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।