চীনের পারমাণবিক বোমার মজুদ বাড়ানোর খবরে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য চীন নতুন আরও ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো নির্মাণ করেছে,  এমন খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন পেন্টাগন কর্মকর্তা এবং রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যরা।

নিউজ ডেস্ক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 04:40 AM
Updated : 28 July 2021, 04:40 AM

রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার আমেরিকান ফেডারেশন অব সায়েন্টিস্টসের (এএফএস) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাদের সিনজিয়াং অঞ্চলের পূর্বে হামির কাছে সাইলোর একটি নতুন ক্ষেত্র নির্মাণ করছে, এমন ছবি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইটে।

এক সপ্তাহ আগেই জানা গিয়েছিল, দক্ষিণপূর্বে আরও ৩৮০ কিলোমিটার দূরে ইউমেনে একটি মরু এলাকায় প্রায় ১২০টি সাইলো নির্মাণ করছে বেইজিং।

সাইলো হল একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা, যেখানে বোমা বহনকারী নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।

এএফএসের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত খবরের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্রাটেজিক কমান্ড টুইট করেছে, “দুই মাসের মধ্যে জনসাধারণের নজরে দ্বিতীয়বারের মতো ধরা পড়ল এই ঘটনা, যাকে আমরা বলতে পারি বিশ্বের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং একে ঘিরে থাকা গোপনীয়তার চাদর।”

জুলাইয়ের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর চীনের এই পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বাড়ানোর পদক্ষেপকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়ে বলে, বেইজিং পারমাণবিক অস্ত্রের নূন্যতম মজুদ বজায় রাখার দীর্ঘদিনের নীতি থেকে দূরে সরে আসছে। অস্ত্র প্রতিযোগিতা উস্কে দেওয়ার ঝুঁকি কমাতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে চীনকে আলোচনায় বসার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।

রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্য মাইক টার্নার বলেন, “চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ উদ্বেগজনক এবং তারা এটাও স্পষ্ট করেছে, সেগুলো মোতায়েন করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের মিত্রদের হুমকি দেওয়ার জন্য।”

হাউজ আর্মড সার্ভিসেসের স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস উপ কমিটির এই সদস্য বলেন, “অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান চীন প্রত্যাখ্যান করায় আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি করেছে এবং সব দায়িত্বশীল দেশের উচিত এর নিন্দা জানানো।” 

কমিটির আরেক সদস্য, রিপাবলিকান দলের মাইক রজার্স বলেন, চীনে অস্ত্রের মজুদ বাড়ানোর বিষয়টি এটাই নির্দেশ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদেরও দ্রুত আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

২০২০ সালে পেন্টাগনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পারমাণবিক বোমার মজুদ সর্বনিম্ন অবস্থায় ২০০টির মতো এবং যেহেতু বেইজিং তাদের সামরিক বাহিনী আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে, তাই এই মজুদ দ্বিগুণ করা হতে পারে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি ফ্যাক্ট-শিটের বরাতে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভাণ্ডারে প্রায় তিন হাজার ৮০০ পারমাণবিক বোমা রয়েছে, যার মধ্যে ১ মার্চ পর্যন্ত মোতায়েন রয়েছে এক হাজার ৩৫৭টি।

ওয়াশিংটন কয়েকবার চীন ও রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, একটি নতুন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনায় বসার জন্য।

বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েনডি শেরম্যানের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আলোচনায় বসার আগে চীনের নতুন সাইলো নির্মাণের খবর এল।

বেইজিং অবশ্য বলেছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার তুলনায় নগন্য এবং কৌশলগত নিরাপত্তা নিয়ে তারা আলোচনায় বসতে রাজি, যা হতে হবে ‘সমতা ও পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে’।