ইসরায়েলে অত্যাধুনিক ‘অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন বাইডেন প্রশাসনের’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম অত্যাধুনিক ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের অস্ত্রের সম্ভাব্য বিক্রিতে অনুমোদন দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 09:35 AM
Updated : 18 May 2021, 09:35 AM

ইসরায়েলের সঙ্গে এখন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক ও সামরিক গোষ্ঠী হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চললেও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা ওই অস্ত্র বিক্রি চুক্তিতে বাধা দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার মার্কিন কংগ্রেসের বেশ কয়েকটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ইসরায়েলের কাছে বাণিজ্যিকভাবে এসব অস্ত্র বিক্রির আগ্রহের কথা গত ৫ মে সরকারের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয় বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের তিনজন কর্মী।

বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে বড় ধরনের অস্ত্র বিক্রি চুক্তি কার্যকরের আগে নিয়মিত পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই কংগ্রেসকে বিষয়টি জানানো হয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর আগে এপ্রিলে সাধারণ অনানুষ্ঠানিক পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেও কংগ্রেসকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর এ ধরনের বিক্রিতে বাধা দিতে চাইলে কংগ্রেস ১৫ দিন সময় পায়। যদিও এবার এমন কিছু হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এ অস্ত্র বিক্রি সংক্রান্ত খবর প্রথম প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট।

কংগ্রেসকে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল, তখন ইসরায়েলের কাছে বোয়িংয়ের বানানো জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনেশনসের (জেডিএএমএস) বিক্রিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখা হচ্ছিল; গত সপ্তাহ থেকে হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হলে পরিস্থিতি খানিকটা বদলে যায়।

আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করার সময় কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির পর্যালোচনায় ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান নেতাদের কেউই এ অস্ত্র বিক্রি নিয়ে আপত্তি তোলেননি বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করা ওই কর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, কেন্দ্রীয় আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী জেডিএএমএস চুক্তির মতো বাণিজ্যিকভিত্তিতে সরাসরি বিক্রি সংক্রান্ত বিষয় নিশ্চিত করা বা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের বিধিনিষেধ আছে।

“বর্তমান সহিংসতা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাজ করছি,” বলেছেন তিনি।

ইসরায়েল-গাজা সাম্প্রতিক সহিংসতাকে কেন্দ্র করে ডেমোক্রেটদের প্রগতিশীল অংশের প্রায় সবাই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র সরকারের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনকে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানালেও কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সদস্যদের বেশিরভাগই ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনে যে কোনো অস্ত্র বিক্রিতে কংগ্রেসেরে আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকলেও এবার তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেননা, ইসরায়েল হচ্ছে বিশ্বের সেই হাতেগোনা কয়েকটি দেশের একটি যাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুতগতিতে হয়।

এখন কংগ্রেসের সদস্যরা এ অস্ত্র বিক্রি নিয়ে আপত্তি জানাতে বা কোনো রেজ্যুলিউশন নিতে চাইলেও, বেঁধে দেওয়া ১৫ দিনের সময় প্রায় শেষ হয়ে আসায় তা তারা করতে পারবেন না বলেই মনে হচ্ছে।