এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জাপানকে হতবাক করে দিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
‘টুইটার খুনি’ নাম পাওয়া তাকাহিরো শিরাইশির ফ্ল্যাটে মানবদেহের বিভিন্ন অংশ পাওয়ার পর ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বুধবার রাজধানী টোকিওতে তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ‘সত্য’।
কিন্তু তার আইনজীবী যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, যেহেতু শিরাইশির শিকাররা নিজেদের খুন হওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিল তাই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ হ্রাস করা উচিত।
কিন্তু শিরাইশি তার আইনজীবীর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় দৈনিক মাইনিচি শিম্বুনকে তিনি জানিয়েছেন, নিহতদের সম্মতি ছাড়াই তিনি তাদের খুন করেছেন।
হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে শিরাইশির মৃত্যুদণ্ড হবে। জাপানে মৃত্যুদণ্ড ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়।
সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, ‘যে সব নারীরা আত্মহত্যার চিন্তা করছেন, তাদের সহজ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য’ ২০১৭ সালের মার্চে শিরাইশি একটি টুইটার একাউন্ট খুলেছিলেন।
তিনি যাদের খুন করেছেন তাদের মধ্যে আট জন নারী, যাদের একজনের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।
একমাত্র যে পুরুষকে তিনি খুন করেছেন তার বয়স ছিল ২০ বছর। নিজের মেয়ে বন্ধু কোথায় আছে তা জানতে শিরাইশির মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি, তারপরই তাকে খুন হতে হয় বলে জানিয়েছে জাপানের গণমাধ্যম।
ধারণা করা হচ্ছে, ২৯ বছর বয়সী শিরাইশি তার শিকারদের এই বলে প্রলুব্ধ করেছিলেন যে তিনি তাদের মৃত্যুবরণ করতে সহায়তা করতে পারবেন এবং কিছু ক্ষেত্রে তাদের পাশাপাশি তিনি নিজেও আত্মহত্যা করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন।
তার টুইটার প্রোফাইলে এই কথাগুলো লেখা ছিল: “যারা সত্যিই যন্ত্রণার মধ্যে আছেন আমি তাদের সাহায্য করতে চাই। অনুগ্রহ করে আমাকে যেকোনো সময় সরাসরি বার্তা পাঠান।”
একজন তরুণী নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ তার খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করার পর ধারাবাহিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রথম প্রকাশ পায়। ওই নারীকেও শিরাইশি খুন করেছেন বলে পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে আসে।
ওই সময় পুলিশ টোকিওর নিকটবর্তী জামা এলাকায় শিরাইশির ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে মানবদেহের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।
বুধবার আদালতে মামলাটির প্রথম শুনানি দেখতে ১৩টি পাবলিক গ্যালারিতে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এএইচকে জানিয়েছে।