ভারত এবং চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাতে রাজি হওয়ার দু’দিনের মাথায়ই সীমান্তে চীনা তৎপরতার এ নতুন ছবি দু’পক্ষকে আবার সংঘাতে ঠেলে দিতে পারে বলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে দুই পক্ষের মধ্যে ১৫ জুনের সংঘর্ষে ভারত ২০ সেনা নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল। এ ঘটনার জন্য দু’দেশ একে অপরকে দোষারোপও করে।
এরপর গত সোমবার দুই দেশের সেনা কমান্ডাররা বৈঠক করে সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি হন।
কিন্তু এরপরও গালওয়ানে নতুন পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলতে দেখা গেছে কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে। এতে দু’পক্ষের সমঝোতা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার সোমবার স্যাটেলাইটে ওই অঞ্চলের ছবি তোলে। এতে দেখা যায়, গালওয়ান নদীর উপকূলে একটি উঁচু জায়গায় বিস্তৃত পরিসরে একটি কাঠামো গড়ে তুলছে চীন।
ভারত বলছে, যেখানে এই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে তা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ভারতীয় অংশে। যদিও সীমান্তে দু’দেশের মধ্যকার এই নিয়ন্ত্রণরেখা সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ করা নেই।
চীনের ভাষ্য, প্রায় ১৪ হাজার ফুট (৪,৩০০ মিটার) বিস্তৃত পুরো গালওয়ান উপত্যকাই তাদের অঞ্চল।সেখানে সংঘর্ষ সৃষ্টির জন্য ভারতীয় সেনারাই দায়ী।
‘অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’ এর উপগ্রহ উপাত্ত বিশেষজ্ঞ নাথান রুসার বলেন, এইসব নির্মাণকাজ দেখে দেখে মনে হচ্ছে, সেনাদের পিছু হটার সম্ভাবনা কম।
এক টুইটে রুসার আরো বলেন, ২২ জুন গালওয়ান উপত্যকার স্যাটেলাইট ছবি থেকে প্রতীয়মাণ হচ্ছে যে, ‘পিছু হটা’ শব্দটি আদতে ভারত সরকারের ক্ষেত্রেও আর খাটছে না।
কারণ, সর্বসাম্প্রতিক ওই ছবিতে ভারতীয় অংশে প্রতিরক্ষা বেষ্টনী দেখা গেছে। যে বেষ্টনী গত মে মাসে ছিল না। তাছাড়া, একমাস আগের ছবিতে ভারতের সম্মুখ সেনাদের একটি পোস্ট যে অবস্থানে দেখা গিয়েছিল তা থেকে কিছুটা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও মনে হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণাল সীমান্তের কর্মতৎপরতা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, তারা পরিকল্পনামাফিক সেনাদের পিছু হটার প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি যাচাইও করবেন।
ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান দীপক কাপুর বলেছেন, “চীনাদের নিয়ে আস্থার ঘাটতি আছে। তাই তারা মুখে সেনা সরানোর কথা বললেও আমরা মাঠ পর্যায়ে তা দেখতে চাইব। সেটি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সতর্কাবস্থায় থাকবে।”