নিউ জিল্যান্ডে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে নিহত ৫

নিউ জিল্যান্ডে একটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় অন্তত ৫ জন নিহত,  ২০ জন আহত এবং আরো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2019, 07:31 AM
Updated : 9 Dec 2019, 10:58 AM

অগ্ন্যুৎপাতের কয়েক মূহুর্ত আগেও হোয়াইট আইল্যান্ডের ওই আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের সীমানার মধ্যে পর্যটকদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

পুলিশের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমাবার দুপুর ২টা ১১ মিনিটের দিকে দেশটির নর্থ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের অদূরে হোয়াইট আইল্যান্ড আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্গিরিত ছাই শূন্যে কয়েক হাজার ফিট উপরে উঠে যায়। হোয়াইট আইল্যান্ড থেকে ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কয়েকজন পর্যটক রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

যাদের উদ্ধার করে আনা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওদিকে, আহতদের মধ্যেও কয়েকজনের অবস্থা সংকটজনক বলে জানিয়েছে রেডিও নিউ জিল্যান্ড। হোয়াইট আইল্যান্ড দ্বীপটিকে ঘিরে ‘নো ফ্লাই জোন’ স্থাপন করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, অগ্ন্যুৎপাতের সময় দ্বীপটিতে ৫০ জনের কম মানুষ ছিল। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলাকাটিতে এখন উদ্ধার অভিযান চালানো অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

ফাকরারি নামেও পরিচিত হোয়াইট আইল্যান্ড নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে অন্যতম হওয়া সত্ত্বেও দ্বীপটিতে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো থেকে আসা পর্যটক মাইকেল শেইড অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে দ্বীপটি ত্যাগ করেন। যে নৌকায় তিনি ছিলেন সেখান থেকে অগ্ন্যুৎপাতের নাটকীয় ফুটেজ তুলে টুইটারে পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে দেখা গেছে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ দিয়ে ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে, এরপর ধোঁয়ায় পুরো দ্বীপ ছেয়ে গেছে।

“এটি বিশ্বাস করা খুব কঠিন। ৩০ মিনিটও হবে না আমাদের পুরো দলটি আক্ষরিকভাবেই মূল জ্বালামুখের কিনারে দাঁড়িয়েছিল,” বলেন শেইড।

হোয়াইট আইল্যান্ডের অবস্থান নিউ জিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে। মূল ভূখণ্ড থেকে ওই দ্বীপটিতে ধোঁয়া ও ছাইয়ের বিশাল কুণ্ডুলি দেখা যাচ্ছে।

আগ্নেয়গিরিটির ছাই শূন্যে নিক্ষিপ্ত হয়ে ১২ হাজার ফুট উপর পর্যন্ত উঠে গেছে বলে দেশটির আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ’ডুর্ন বলেন, “ওই সময় দ্বীপটিতে বা এর আশপাশে অনেক পর্যটক ছিলেন বলে জানি আমরা, তাদের মধ্যে নিউ জিল্যান্ডার ও বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরাও আছেন।

“যাদের ভালোবাসার মানুষ ওই সময় দ্বীপটিতে বা তার আশপাশে ছিলেন তাদের মধ্যে যে প্রবল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে তাও জানি আমি। তাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, পুলিশ তাদের পক্ষে সম্ভব সবকিছুই করবে।”

‘স্বল্পস্থায়ী অগ্ন্যুৎপাতটি’ ছাইয়ের কুণ্ডুলিকে ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় ছুড়ে দিয়েছে বলে নিউ জিল্যান্ডের জিওসায়েন্স এজেন্সি জিএনএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। অগ্ন্যুৎপাত বাড়ার আর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছে তারা।