লেবাননে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে, বিক্ষোভে গুলিতে নিহত ১

সরকারের দুর্নীতি এবং রাজনীতিতে স্বজন প্রীতির বিরুদ্ধে গত অক্টোবরে লেবাননে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা দিন দিন গভীর সংকটময় পরিস্থিতির দিকে এগুচ্ছে। রাজধানী বৈরুতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলাকালে গুলিতে এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

>>রয়টার্স
Published : 13 Nov 2019, 04:31 PM
Updated : 13 Nov 2019, 04:31 PM

বিক্ষোভেকারীদের শান্ত করতে অক্টোবরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ থামেনি। কারণ পদত্যাগ করার পরও হারিরিই এখনও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

মঙ্গলবার রাতে টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন আবারও বিক্ষোভকারীদের প্রতি শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই বিক্ষোভের পরিণতি ‘বিপর্যয়কর’ হতে পারে।

আউনের ওই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা রাতেই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে এরকমই একটি বিক্ষোভের সময় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হলে এক বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

ওই হত্যার জেরে বুধবার সকাল থেকে পুরো লেবানন জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘দ্রুজ’ সম্প্রদায়ের প্রবীণ রাজনীতিক ওয়ালিদ জুমব্লাটার অনুসারী। ওয়ালিদ লেবাননে গৃহযুদ্ধের সময় বিদ্রোহীদের নেতা ছিলেন।

‌বুধবার তিনি তার সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, প্রেসিডেন্ট আউন বিক্ষোভকারীদের উপর ‘বিপর্যয় নেমে আসার’ হুমকি দিয়ে কার্যত নেতারা সবার ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে বোঝাতে চেয়েছেন।

“এটি অনেকটা যেন তাদের বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, যেন জনগণের কোনো মতামত নেই, তারা কিছু বলতেই পারবে না।”

টেলিভিশনে আউন বিক্ষোভকারীদের নিয়ে যা বলেছেন তার সারসংক্ষেপ অনেকটা এরকম, যাদের দেশ পরিচালনা পছন্দ হচ্ছে না তারা চাইলে দেশ ছড়ে চলে যেতে পারেন।

প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে ৩৩ বছরের এক নারী বিক্ষোভকারী বলেন, আউন যেভাবে বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে কথা বলেছেন তাতে মনে হচ্ছে আমরা সবাই শিশু।

“আমাদের একটু হলেও সম্মান করুন। গত একমাস ধরে দিনরাত রাস্তায় অবস্থান করা এই মানুষদের সম্মান করুন।”

বিক্ষোভের কারণে লেবাননে মঙ্গলবার ও বুধবার টানা দুইদিন ব্যাংক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

যদিও প্রায় চার সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার বিক্ষোভের কারণে বেশিভাগ দিন সেগুলো বন্ধই থেকেছে। ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন সব ধরনের লেনদেন বন্ধ আছে।

“আউন যতটা সহজ ভাষায় বিক্ষোভকারীদের দাবিকে উড়িয়ে দিলেন তাতে স্বাভাবিক ভাবেই জনগণ ধরে নেবে তাদের সরকারের উপর চাপ আরো বাড়াতে হবে। তারা ভাববে ‘আমাদের থামলে চলবে না’।”

বিশ্বের শীর্ষ ঋণগ্রস্ত দেশগুলোর একটি লেবাননের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে।

এ অবস্থায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও অচলাবস্থা পরিস্থিতি আরো নাজুক করে ফেলেছে।