এয়ারলাইন্সগুলো সাধারণত তাদের উড়োজাহাজে গন্তব্যের বিমানবন্দরগুলো থেকে উচ্চমূল্যে জ্বালানি ভরে নেওয়ার খরচ বাঁচাতে উড়োজাহাজের ট্যাংকারেই টন টন অতিরিক্ত জ্বালানি বহন করে। এতে উড়োজাহাজের ওজন বেড়ে গিয়ে বেড়ে যায় গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণের পরিমাণও।
সম্প্রতি বিবিসি’র প্যানোরামা প্রোগ্রামের অনুসন্ধানে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের এমন কৌশল অবলম্বনের বিষয়টি সামনে আসার পর সমালোচকরা এয়ারলাইন্সগুলোর বিরুদ্ধে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ভন্ডামির অভিযোগ করেছেন। তাদের কথায়, এ কৌশল যত ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে তাতে তা বিমানপরিবহন শিল্পের কার্বন নির্গমণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতি রীতিমত অবজ্ঞা করারই সামিল।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এর উড়োজাহাজে সম্প্রতি বাড়তি জ্বালানি বহনের বিষয়টি প্রকাশ করেছেন এ এয়ারলাইন্সেরই এক হুইশেলব্লোয়ার। বিবিসি’র প্যানোরামা অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের (বিএ) উড়োজাহাজগুলো গত বছর অতিরিক্ত জ্বালানি বহন করতে গিয়ে বাড়তি প্রায় ১৮ হাজার টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করেছে।
বিষয়টি সামনে আসার পর এখন বিএ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নতুন করে বিচার-বিশ্লেষণ দেখার ঘোষণা দিয়েছে। তারা এখন বলছে, খরচ বাঁচাতে উড়োজাহাজের ট্যাঙ্কারে বাড়তি জ্বালানি বহন ‘হয়ত ঠিক কাজ নয়’।
তবে তাদের দাবি, শুধু খরচ বাঁচাতে নয় বরং নিরাপত্তা ও উড়োজাহাজ চালাতে সুবিধার জন্যও তারা এ কাজ করে। তাদের ব্যাখ্যা, বাড়তি জ্বালানি থাকলে উড়োজাহাজ চারদিকে ঘোরাতে সুবিধা হয়। অথচ এই কৌশলে প্রতি ফ্লাইটে মাত্র ১০ পাউন্ডের কিছু বেশি অর্থ সাশ্রয় হয়। যদিও এতেই তাদের মাসিক খরচ কয়েকশ পাউন্ড কমে যায়।
গবেষকদের হিসাব মতে, ইউরোপের এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতি ৫ টি ফ্লাইটের একটিতে খরচ কমাতে বাড়তি জ্বালানি বহনের কৌশল অবলম্বন করা হয়। যার ফলে ইউরোপের আকাশ পথে প্রতিবছর বাড়তি যে কার্বন নিঃসরণ হয় তা একটি শহরে এক লাখ মানুষ যে কার্বন নিঃসরণ করে তার সমানি।
পরিবেশবাদী গ্রুপ গ্রিনপিস ইউকে’র নির্বাহী পরিচালক জন সুভেন বিবিসি’কে বলেন, “বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়ীরা পৃথিবীর সুরক্ষার চাইতে নিজেদের পকেট ভারি করতে বেশি আগ্রহী। বাড়তি জ্বালানি বহন এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।”