যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এবারের এ প্রতিনিধি পরিষদেই সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যের সমাহার বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এবারই সবচেয়ে বেশি নারী দেশটির বিভিন্ন সংসদীয় এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এবারের প্রতিনিধি পরিষদে এসে ইতিহাস গড়েছেন দুই মুসলিম কংগ্রেসওম্যান- রাশিদা তালিব ও ইলহান ওমর। আছেন আদিবাসী দুই মার্কিন নারী ডেবরা হাল্যান্ড ও শেরিস ডেভিডস।
নিউ ইয়র্ক থেকে নির্বাচিত সবচেয়ে কম বয়সী কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজও এবারের প্রতিনিধি পরিষদ আলোকিত করবেন।
বৃহস্পতিবার এ প্রতিনিধি পরিষদ নতুন স্পিকারও মনোনীত করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বিজয়ী, পোড় খাওয়া ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসিই সে দায়িত্ব পেয়ে ওয়াশিংটনের তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত হলেন।
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের অর্থায়ন নিয়ে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে কংগ্রেসের রেষারেষিতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থার মধ্যেই প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের হাতুড়ি তুলে নিলেন ৭৮ বছর বয়সী এ নারী।
ডেমোক্র্যাট পার্টির এ প্রভাবশালী নেতা ২০০৭ সালেও একদফা হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভস এর স্পিকার হয়েছিলেন।
দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব পেয়ে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত এ প্রতিনিধি বলেছেন, তিনি চলমান অচলাবস্থা কাটাতে চান, তবে দেয়াল নির্মাণে ট্রাম্পের চাহিদা পূরণ করে নয়।
“নারীদের ভোটাধিকার পাওয়ার ১০০ বছরে সুনির্দিষ্টভাবে কেবল কংগ্রেসের এ কক্ষের একজন নারী স্পিকার হয়ে আমি গর্বিত। আমাদের সবারই এখন সক্ষমতা ও সুযোগ হয়েছে কংগ্রেসের আরও শতাধিক নারীর সঙ্গে কাজ করার, ইতিহাসে (নারীর) এ সংখ্যাই সর্বোচ্চ,” বলেছেন ন্যান্সি।
এবারের এ ১১৬তম প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান মিলিয়ে ১০২ জন নারী সংসদ সদস্য আছেন, যা মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, জানিয়েছে বিবিসি।
এরমধ্যে ৩৬জন প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছেন; ৪৩ জন অশ্বেতাঙ্গ।
ভার্জিনিয়া থেকে নির্বাচিত ক্যারল মিলারই এ তালিকায় একমাত্র নতুন রিপাবলিকান। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলটির নিম্নকক্ষে মোট নারী প্রতিনিধির সংখ্যা এখন ১৩; গতবারের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এ সংখ্যা ছিল ২৩।
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট ২৩৫ সাংসদের মধ্যে নারীই ৮৯ জন।
নতুন এ প্রতিনিধি পরিষদের জন্য চলমান অচলাবস্থা নিরসনই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিদায়ী প্রতিনিধি পরিষদ ট্রাম্পের দেয়াল নির্মাণের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করলেও তা সিনেটে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট না পাওয়ায় আটকে যায়।
স্পিকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ন্যান্সি বলেছেন, তিনি মার্কিন জনগণের চাহিদা পূরণের স্বার্থে সরকারের অচলাবস্থার নিরসন চান।
“আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এ কংগ্রেস হবে স্বচ্ছ, দলনিরপেক্ষ ও ঐক্যবদ্ধ। আসুন আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেককে শ্রদ্ধা করি, সত্যকে সম্মান করি,” বলেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউজের ব্রিফিং কক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাট এ নেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
“এটি খুবই দারুণ অর্জন। আশা করছি আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব,” বলেছেন তিনি।