ট্রাম্পের সমালোচনা: মার্কিন দূতকে তলব করল পাকিস্তান

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং আল কায়েদা নেতা লাদেনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সমালোচনার প্রতিবাদে মার্কিন দূতকে তলব করেছে পাকিস্তান।

>>রয়টার্স
Published : 20 Nov 2018, 11:04 AM
Updated : 20 Nov 2018, 12:08 PM

ইসলামাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কে মঙ্গলবার ডেকে পাঠায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই অযাচিত যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তার ঘোর প্রতিবাদ জানাতেই মার্কিন উপরাষ্ট্রদূত পল জোনস কে ডেকে পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।”

ট্রাম্প গত কয়েকদিনে যে সব কথা বলেছেন তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছে পাকিস্তান। ক্ষোভ ঝেড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। সোমবার ট্রাম্প ও ইমরান  টুইটারে পরস্পরের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে কটুক্তিও করেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র- পাকিস্তান সম্পর্কে আরো অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত রোববার ‘ফক্স নিউজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পাকিস্তান কিছুই করেনি’ বলে ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানকে শ’শ’ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ সেই পাকিস্তানই জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে লুকিয়ে থাকতে সহায়তা করেছিল। পাকিস্তান কিছুই না করায় যুক্তরাষ্ট্র আর তাদেরকে অর্থ দেবে না বলেও জানান ট্রাম্প।

সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাম্পের অভিযোগের জবাব দেন ইমরান খান। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য অতি নগন্য ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাছাড়া, আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকে বলির পাঁঠা বানানো উচিত না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ইমরানের একের পর এক টুইটের জবাবে সোমবার পাল্টা টুইটে আরো দ্বিগুণ অভিযোগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ট্রাম্পও। তিনি অভিযোগ করে বলেন, লাদেনের আরো আগেই ধরা পড়া উচিত ছিল, কিন্তু পাকিস্তান অর্থকড়ি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রকে লাদেনের অবস্থান জানায়নি।

মঙ্গলবার মার্কিন দূতকে ডেকে ট্রাম্পের এ অভিযোগেরই কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ মেনে নেওয়া যায়না মন্তব্য করে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, “তারা যুক্তরাষ্ট্রকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে, পাকিস্তানের দেওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই প্রাথমিকভাবে ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।”

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব তাহমিনা জানজুয়া বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কোনো দেশই পাকিস্তানের মত এত চড়া মূল্য দেয়নি। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের নেতারাও অনেক ক্ষেত্রেই আল-কায়েদা নেতাদের পাকড়াও করা এবং সন্ত্রাসের হুমকি দূর করতে পাকিস্তানের সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন।

পাকিস্তানের সক্রিয় সহযোগিতার কারণেই বহু শীর্ষ আল কায়েদা নেতা নিহত হয়েছে কিংবা ধরা পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেকথা ভুলে গেলে চলবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।