১৮০ কিলোমিটার হেঁটে মুম্বাইয়ে ৩৫ হাজার কৃষক

ভারতে কৃষি ঋণ মওকুফ ও আদিবাসী কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়াসহ নানা দাবিতে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে গত পাঁচ দিনে ১৮০ কিলোমিটার পথ হেঁটে মুম্বাইয়ে পৌঁছেছে ৩৫ হাজার কৃষক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2018, 01:45 PM
Updated : 11 March 2018, 01:45 PM

এনডিটিভি জানায়, দলটি থানে-মুম্বাই সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে এবং সোমবার কে জে সোমাইয়া গ্রাউন্ড অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে। এদিন মুম্বাইয়ের বিধানসভা ভবনের সামনে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে তাদের।

যানজট এড়াতে মুম্বাই ট্রাফিক পুলিশ এরই মধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কে জে সোমাইয়া গ্রাউন্ড এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

বাম ধারার অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা (এআইকেএস) এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিক্ষোভে আদিবাসী কৃষক এবং নারীরাও অংশ নিচ্ছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আদিবাসী দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি এখন তাদের ‘জীবন-মরণ সমস্যা’।

এআইকেএস’র প্রেসিডেন্ট অশোক ধাওয়াল বলেন, তারা রোববার প্রাদেশিক মন্ত্রী গিরিশ মহাজনের সঙ্গে দেখা করেছেন।

“তিনি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাভিসকে আমাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।”

শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অশোক আরও বলেন, তাদের সমাবেশের কারণে মুম্বাইবাসীদের অসুবিধায় পড়তে হবে না।

“আমরা ২৫ হাজার জনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। আমাদের শক্তি আজ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। আগামীকাল এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কিন্তু তাতে নগরীতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না। আমরা বেলা ১১টার পর মিছিল শুরু করব। ততক্ষণে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে পৌঁছে যাবে।”

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী জিদাবাই, যিনি চারদিন ধরে মিছিলে হাঁটছেন এবং অন্যদের অন্দোলন চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি এনডিটিভিকে বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই, তার উচিত জমিগুলো আমাদের নামে করে দেওয়া। যাতে আমরা কাজ করে নিজেদের খাবার যোগাড় করতে পারি।”

ভারতের উগ্রবাদী দল শিবসেনার জ্যেষ্ঠ নেতা একনাথ সিন্ধে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভরত কৃষদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

তবে তিনি পরিষ্কার করে বলেন, প্রাদেশিক মন্ত্রী হিসেবে নয় বরং তিনি শিবসেনা প্রধানের বার্তা নিয়ে তাদের কাছে এসেছেন।

অশোক বলেন, “শিবসেনার পক্ষ থেকে আমাদের শুধুমাত্র সমর্থন দেওয়া হয়েছে, যা ‍দুঃখজনক। তার (একনাথ) উপস্থিতি ও সমর্থনকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু তিনি মহারাষ্ট্র সরকারের অংশ এবং তার কাছ থেকে শুধু সমর্থন পাওয়া যথাযথ নয়। আপনি নিজেদের বাঘ বলেন। কখন আপনি কৃষকদের দুর্দশা কাটাতে গর্জন করবেন?”

আন্দোলনরত কৃষকরা বলছে, কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকারের ঋণ স্কিম কাজে আসছে না। ফলে হাজারের বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছে।

তাছাড়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে সরকার এখনো কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি। ফলে এটিও সরকারের কাছে তাদের দাবি। এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কৃষক আন্দোলন চলবে।